প্রাণঘাতী বিষ উৎপাদনের চেষ্টা করছে আল-কায়েদা

যুক্তরাষ্ট্রে আবারও হামলা চালানোর জন্য আল-কায়েদার একটি শাখা মারাত্মক প্রাণঘাতী বিষ রিসিন উৎপাদনের চেষ্টা করছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা ধারণা করছেন। গত শুক্রবার রাতে নিউইয়র্ক টাইমস-এর একটি প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি বলেছে, ইয়েমেনে আল-কায়েদার শাখা বিপুল পরিমাণে ক্যাস্টর বিন সংগ্রহের চেষ্টা করছে। ক্যাস্টর বিন থেকে রিসিন উৎপাদিত হয়।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, আল-কায়েদা ইয়েমেনের শাবওয়া প্রদেশে গোপনে ক্যাস্টর বিন নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে তাঁদের কাছে তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কমান্ডাররা ক্রমাগত আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন, ইয়েমেনের ক্ষমতায় দীর্ঘ সময় ধরে শূন্যতা সৃষ্টি হওয়ায় জঙ্গিরা তাদের কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার সুযোগ পাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার ইয়েমেনের একজন কর্মকর্তা জানান, দক্ষিণাঞ্চলীয় জিঞ্জিবার শহরের বাইরে সেনাবাহিনীর গুলিতে সন্দেহভাজন চারজন আল-কায়েদা সদস্য নিহত হয়েছে। জিঞ্জিবারের অধিকাংশ জায়গা ইসলামি জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, ইয়েমেনের আল-কায়েদা জঙ্গিরা রিসিন উৎপাদন ও সেগুলো ছোট ছোট বিস্ফোরক পদার্থের মোড়কে ভরার চেষ্টা করছে। এরপর তারা বিপণিকেন্দ্র, বিমানবন্দর কিংবা পাতালরেল স্টেশনের মতো জনাকীর্ণ স্থানে এগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করবে। রিসিন খুবই বিষাক্ত। এর সামান্য কণা নিঃশ্বাসে মিশে গেলে বা রক্তে প্রবেশ করলে মৃত্যু নিশ্চিত।
নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং জাতীয় নিরাপত্তায় নিয়োজিত তাঁর শীর্ষস্থানীয় সহযোগীরা আল-কায়েদার ওই হুমকির কথা বলেছিলেন এবং এরপর থেকে এ বিষয়ে তাঁরা নিয়মিত তথ্য পেয়েছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, শিগগিরই একটি রিসিন হামলা হতে পারে—এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অস্ত্র হিসেবে রিসিনের কার্যকারিতা সীমাবদ্ধ। কারণ, ইয়েমেনে শুষ্ক আবহাওয়া ও রোদের কারণে রিসিনের কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া অন্যান্য স্নায়ুর মতো মানুষের ত্বকের অভ্যন্তরে রিসিন সহজে প্রবেশ করতে পারে না।
কয়েকজন জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁরা একটি হুমকির সম্ভাব্যতার বিষয় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। এতে দেখা গেছে, ইয়েমেনের আল-কায়েদার হামলার ষড়যন্ত্র করার সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে এমন হামলার ষড়যন্ত্র রয়েছে, যেগুলো শেষ মুহূর্তে নস্যাৎ করা হয়।
২০০৯ সালের ডিসেম্বরে ডেট্রয়েটগামী একটি বিমান থেকে শরীরে বোমা বাঁধা অবস্থায় একজন নাইজেরীয়কে আটক করা হয়। এর ১০ মাস পর শিকাগোগামী একটি মালবাহী বিমান থেকে প্রিন্টারের কার্টিজের ভেতর থেকে শক্তিশালী বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.