রাজকীয় বিদায়ের প্রতীক্ষায়

‘ঘূর্ণি যাদুকর’ হিসেবেই সবাই তাঁকে চেনে। পুরো ক্যারিয়ার জুড়েই উইকেটের বন্য বইয়ে দিয়েছেন মুরালিধরন। ইনজুরিতে পড়েছেন, চাকিং বিতর্কে হয়েছেন জর্জরিত। কিন্তু কোনোকিছুই তাঁর ক্যারিয়ারের জয়যাত্রাকে রুখতে পারেনি। টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ আর ওয়ানডেতে ৫৩৪ উইকেট যাঁর সাফল্য মুকুটে তিনি তো খেলাটির এক মহান প্রতিনিধিই। ডন ব্র্যাডম্যান কিংবা জিম লেকারের কীর্তি গাঁথা লিখতে লিখতে হয়রান ক্রিকেট ইতিহাসবিদদের অনন্তকালের চমত্কার এক রসদই হয়ে রইবেন মুত্তিয়া মুরালিধরন।
সেই মুরালির জন্য আজকের বিশ্বকাপ ফাইনাল এক আবেগের লড়াই হয়েই অবতীর্ণ হয়েছে। জীবনের শেষ ম্যাচ বিশ্বকাপ ফাইনাল। এর আগে ইমরান খান ছাড়া আর কে খেলেছিলেন-তা ইতিহাসবিদদের গবেষণার বিষয় হতে পারে। জীবনে এর আগে একবার বিশ্বকাপ জিতলেও জীবনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিতে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ সাফল্যের ভাগীদার হওয়ার সুযোগ তিনি কেন ছাড়তে চাইবেন। তিনি যেমন এই সাফল্য হাতছানিতে মুখিয়ে রয়েছেন, ঠিক তেমনি তাঁর সতীর্থরা উন্মুখ মুরালিকে দারুণ এক বিদায় জানাতে। তাঁদের ভাষায়, বিশ্বকাপ জয়ই হতে পারে মুরালির মতো গ্রেট ক্রিকেটারকে বিদায় জানানোর সর্বোত্কৃষ্ট পন্থা।
আজ যদি শ্রীলঙ্কা কাপ জেতে তাহলে দলপতি কুমার সাঙ্গাকারা নিজেকে নিয়ে যাবেন অর্জুনা রানাতুঙ্গার সারিতে। তিনি হবেন বিশ্ববিজয়ী দ্বিতীয় শ্রীলঙ্কান বীর। কিন্তু, নিজের এত বড় সম্মান তাঁর কাছেও গৌন মনে হচ্ছে। তাঁরও একমাত্র চিন্তা মুরালিকে বিশ্বকাপ উপহার দেওয়ার। যেন, মুরালিই সব। তাঁর মতে, ‘মুরলির উপস্থিতি দলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তিনি একজন বড় ম্যাচের সৈনিক। তাঁর জন্যই আমাদের বিশ্বকাপটি জিততে হবে।’
ইনজুরি সমস্যা মুরালিধরনের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে এক অনিশ্চয়তার পর্দা টেনে দিয়েছে। ইনজুরি সমস্যা তাঁর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালেও ছিল। কিন্তু, তিনি সব অনিশ্চয়তার পর্দা সরিয়ে সেমিফাইনাল খেলেছেন ও দলকে ফাইনালে তুলতে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। তাই সাঙ্গাকারার আশা ও বিশ্বাস, তিনি আজ ফাইনালে খেলবেন, আর নিজের ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন দারুণ এক স্টাইলে।
মুরালিকে দারুণ সম্ভাষণে বিদায় জানাতে প্রস্তুত পুরো উপমহাদেশই!

No comments

Powered by Blogger.