জাতিসংঘের তদন্তকারী দল লিবিয়ায়

লিবিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে জাতিসংঘের একটি তদন্তকারী দল দেশটির রাজধানী ত্রিপোলিতে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল এই দলটি নিয়োগ দেয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ার ওপর আরোপিত তেল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন গত মঙ্গলবার লিবিয়ায় পাশ্চাত্য জোটের অভিযান চালানোর কঠোর সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেন, লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে হত্যা করার কোনো অধিকার পাশ্চাত্য জোটের নেই।
লিবিয়ার উপজাতি নেতারা গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের তদন্তকারী দল গতকাল বুধবার ত্রিপোলি পৌঁছায়। দেশটির সরকার দলটিকে তদন্তের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে। দলটির সদস্যরা জানান, তাঁরা সব পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন। গাদ্দাফি বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পাশাপাশি বিদ্রোহী সেনা এবং ন্যাটো বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হবে। তবে দলটিকে মূলত গাদ্দাফি বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনার নভি পিল্লাই ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে বলেন, লিবিয়ায় সম্ভবত ব্যাপকভাবে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ার ওপর থেকে তেল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় বিদ্রোহীদের দখলে থাকা খনির তেল বিক্রি করতে পারবে বিদ্রোহীরা। এতে বিদ্রোহীরা যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে যুক্ত করবে বলে জানা গেছে।
রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী পুতিন লিবিয়া অভিযানের সমালোচনা করে বলেন, পাশ্চাত্য জোটের অবশ্যই উচিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব মেনে চলা। ওই প্রস্তাবে লিবিয়ার সাধারণ জনগণকে রক্ষার জন্যই শুধু অভিযানের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, গাদ্দাফিকে হত্যা করার জন্য নয়। তিনি বলেন, ‘তাঁরা বলেছেন, গাদ্দাফিকে হত্যা করতে চান না। আবার এখন তাঁদের কোনো কোনো কর্মকর্তা বলছেন, হ্যাঁ, আমরা গাদ্দাফিকে হত্যা করতে চাই।’ পুতিন প্রশ্ন করেন, ‘গাদ্দাফিকে হত্যার অনুমতি কে তাঁদের দিয়েছে? কোনো বিচার হয়েছে? তিনি (গাদ্দাফি) কে, সেটা কোনো বিষয় নয়, তাঁকে হত্যা করার অধিকার কে কাকে দিয়েছে সেটা প্রশ্ন।’ ডেনমার্ক সফরে গিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে লিবিয়া প্রসঙ্গে এসব কথা বলেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী পুতিন। প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে একটি রাশিয়া।
লিবিয়ার ৬১ আদিবাসী নেতা এক যুক্তবিবৃতিতে গাদ্দাফিকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লিবিয়ার অখণ্ডতার ওপর হুমকি আসছে। গাদ্দাফি ও তাঁর পরিবারের নানা প্রচারণার কথাও আমরা শুনছি। আমরা বলতে চাই, কোনো কিছুই আমাদের মধ্যে বিভক্তি আনতে পারবে না। আমরাও অবাধ গণতন্ত্র এবং ঐক্যবদ্ধ লিবিয়া চাই।’ তাঁরা লিবিয়ার স্বার্থে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে গাদ্দাফির প্রতি আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.