বিশ্বসম্প্রদায়ের সঙ্গে মিয়ানমারও শরিক হতে চায়: সু চি

মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি বলেছেন, বিশ্বসম্প্রদায়ের সঙ্গে মিয়ানমারও শরিক হতে চায়। গতকাল শবিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে শুরু হওয়া বিশ্ব অর্থনৈতিক সম্মেলনে এক অডিও বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি এ কথা বলেন।
সু চি বলেন, ‘আমি মিয়ানমারের সাড়ে পাঁচ কোটি নাগরিকের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আমরা বিশ্বসম্প্রদায়ের অংশ হতে চাই। শুধু অর্থনৈতিক ও সামাজিক দিক থেকেই যুক্ত হওয়া নয়, বরং আমরা নিজ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও ঐক্যও অর্জন করতে চাই, যার মাধ্যমে আমাদের দেশের জনগণের চাওয়া-পাওয়াকে পুরোমাত্রায় তুলে ধরা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, মিয়ানমারের এই বিপুলসংখ্যক নাগরিকের বেশির ভাগই এখনো পশ্চাতে পড়ে রয়েছে।’ দেশটির উন্নয়নের স্বার্থে বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে মিয়ানমারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
সু চি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা ও জাতীয় ঐক্য ছাড়া মিয়ানমার বিশ্বসম্প্রদায়ের অংশ হতে পারবে না।
পার্লামেন্ট অধিবেশন কাল বসছে: মিয়ানমারে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কাল সোমবার শুরু হতে যাচ্ছে সে দেশের পার্লামেন্ট অধিবেশন। অধিবেশনের কার্যক্রম গোপন রাখা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১৯৬২ সালে জান্তা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দেশটিতে আর কোনো পার্লামেন্টের অধিবেশন বসেনি। সু চির অনুপস্থিতিতে গত নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। নির্বাচিত এক হাজারেরও বেশি পার্লামেন্ট সদস্য এ অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তাঁরা রাজধানীতে জড়ো হয়েছেন।
নির্বাচনের আগেই এক-চতুর্থাংশ আসন সেনাবাহিনীর জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়। এ ছাড়া সেনা-সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) এক হাজার ১৫৪ আসনের মধ্যে ৮৮২টিতেই জয়লাভ করে। এদিকে জান্তা সরকারের তথাকথিত ‘সুশৃঙ্খল গণতন্ত্র’র নামে দেওয়া এই নির্বাচনে বিজয়ী আইনপ্রণেতারা জানেন না নতুন পার্লামেন্টে তাঁদের ঠিক কী ধরনের দায়িত্ব পালন করতে হবে।
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফোর্সের (এনডিএফ) আইনপ্রণেতা সো উইন বলেন, ‘পার্লামেন্ট কীভাবে চলবে, এ বিষয়ে কেউ কিছুই জানে না। সেখানে যাওয়ার পর আমরা সব বুঝতে পারব।’
এ ছাড়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন মিয়ানমারে প্রকাশ্যেই আলোচিত হচ্ছে। তা হলো, দেশটির প্রেসিডেন্ট কে হচ্ছেন? সাধারণত উচ্চকক্ষের নির্বাচিত তিনজন প্রার্থী থেকে একজনকে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর দুজনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করা হয়ে থাকে। একটি নির্বাচন কমিটি এটি করে।
মিয়ানমারে ১৯৯২ সাল থেকে ক্ষমতার শীর্ষে থাকা জেনারেল থান শয়ে (৭৭) অবসরের প্রান্তসীমায় পৌঁছে গেছেন। তবে তিনি পুরোপুরি ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ।
পার্লামেন্ট অধিবেশনে রেকর্ডিংয়ের যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার ও মুঠোফোন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.