ক্ষমতা না ছাড়লে বাগবোকে জোর করে সরানো হবে

ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট লঅন্ত বাগবো আপসে সরে না দাঁড়ালে তাঁকে জোর করে সরিয়ে দেওয়া হবে। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর আঞ্চলিক সংগঠন ইকোয়াসের নেতারা। নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় জরুরি শীর্ষ বৈঠকে আইভরি কোস্টের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বাগবোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনার জন্য ইকোয়াসের একটি প্রতিনিধিদলের গতকাল শনিবার আইভরি কোস্টে যাওয়ার কথা। গত ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সে দেশের বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধীদলীয় নেতা আলাসেন ওয়েতাহাকে জয়ী বলে স্বীকৃতি দিয়েছে ইকোয়াস। জাতিসংঘসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠনও ওয়েতাহাকে সমর্থন দিয়েছে। সেনাবাহিনীর সমর্থন নিয়ে বাগবো ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। ওয়েতাহা এর মধ্যে বাগবোর পাশ থেকে সরে আসতে সেনাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আবুজায় শীর্ষ বৈঠকের পর পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর নেতারা এক বিবৃতিতে বলেন, বাগবো যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ত্যাগ করেন, এ ব্যাপারে তাঁকে বোঝাতে এটাই হচ্ছে তাঁদের শেষ চেষ্টা। সহিংস ঘটনা ক্রমে বাড়তে থাকায় আইভরি কোস্টে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নেতারা। তাঁরা বলেন, ভাড়াটে সেনাদের দিয়ে নৃশংস ঘটনা ঘটানোর ফলে সে দেশে এক দিকে যেমন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বাড়ছে, অন্য দিকে তেমনি বাড়ছে গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাগবো যদি তাঁদের কথা না শোনেন, তাহলে আইভরি কোস্টের জনগণের স্বার্থে তাঁরা একটিই ব্যবস্থা নেবেন। তা হচ্ছে—বৈধভাবে বল প্রয়োগ।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সে দেশের ব্যাপারে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে সদস্য দেশগুলোর সেনাপ্রধানদের নিয়ে একটি বৈঠক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
আইভরি কোস্টের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন পশ্চিম আফ্রিকার নেতারা। এ ব্যাপারে তাঁরা বলেন, এসব ঘটনার জন্য যারা দায়ী, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধে শিগগিরই তাদের আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। জাতিসংঘের মহাসচিব এর মধ্যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, আইভরি কোস্টের পরিস্থিতি দিন দিন যেভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে, এতে সে দেশে ২০০২ সালের মতো গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে।
এ মাসের শুরুর দিকে ইকোয়াসের অপর এক জরুরি বৈঠকে আইভরি কোস্টকে সংগঠন থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে বাগবোকে পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.