আসাম জয়ের অপেক্ষায় আবাহনী

বিদেশের মাটিতে শিরোপা জয়ের স্বাদই আলাদা। তা যেকোনো টুর্নামেন্টই হোক। তেমনই একটা টুর্নামেন্ট জয় থেকে এক পা দূরে দাঁড়িয়ে আবাহনী।
আসামের বরদুলই ফুটবল টুর্নামেন্টটা এখন এমন কিছু বড় টুর্নামেন্ট নয়। সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় দল নিয়েই মূলত আয়োজিত হচ্ছে এটি। থাকে দু-তিনটি অতিথি দল। বাংলাদেশের আবাহনী আর নেপালের থ্রি স্টার ক্লাব এবার অতিথি হিসেবে খেলছে ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্টটির ৫৯তম আসরে। দুই অতিথিই খেলছে টুর্নামেন্টের আজকের ফাইনালে।
এই ফাইনাল জিতলে বিদেশের মাটিতে তৃতীয় শিরোপা জিতবে আবাহনী। প্রথমটি ছিল ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে, কেরালার নাগজি ট্রফি। দ্বিতীয়টি ১৯৯৪ সালে, কলকাতার চার্মস কাপ। ১৬ বছর পর বিদেশের মাটিতে তৃতীয় শিরোপা জয়ের সুযোগ আজ আবাহনীর সামনে। তবে আবাহনী জিতলে বাংলাদেশি দল হিসেবে তারাই প্রথম বরদুলই ট্রফি জিতবে না। ২০০৪ সালে এই টুর্নামেন্টে ব্রাদার্স ইউনিয়ন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।
বরদুলই ট্রফিতে ২০০৭ সালে প্রথম খেলেছিল আবাহনী, সেবার বিদায় সেমিফাইনাল থেকে। এবার দ্বিতীয় আসরটা আবাহনী শুরু করে আসাম রেজিমেন্টাল ক্লাবের সঙ্গে ১-১ ড্র দিয়ে। এরপর স্টেট ইলেকট্রিক স্পোর্টসের বিপক্ষে ২-১ জয় দিয়ে সেমিফাইনালে ওঠা। পরশু অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো সেমিফাইনালে আই লিগের দল মেঘালয়ের শিলং লাজংকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আবাহনী।
ফাইনাল জিতবেন তো? কোচ অমলেশ সেন আসাম থেকে কাল টেলিফোনে বললেন, ‘সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ খুব মেরে খেলায় আমাদের কয়েকজন খেলোয়াড় আহত। তবে এটা বড় কোনো সমস্যা হবে না মনে হচ্ছে। জেতার ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। ফাইনালে উঠে শিরোপা না নিয়ে ফিরতে চাই না।’ টুর্নামেন্টে আবাহনীর অধিনায়ক ঘানাইয়ান আউডু ইব্রাহিমের কথাও অনেকটা সে রকম, ‘শিরোপা জয়ের জন্য আমরা মুখিয়ে আছি।’ দলের অন্যতম ডিফেন্ডার নজরুলের কথা, ‘আমরা ভালোই খেলছি। আশা করি চ্যাম্পিয়ন হব।’
নেপালের দলটি সে দেশের লিগের তৃতীয়। ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস তাই ফাইনালটি কঠিনই হবে বলে মনে করছেন, ‘নেপাল থ্রি স্টার দলের দুই মিডফিল্ডার, একজন স্ট্রাইকার, একজন স্টপার এবং গোলরক্ষকের খেলা নজরে পড়েছে আলাদা করে। নেপাল জাতীয় দলের ৪-৫ জন খেলোয়াড় আছে দলটিতে। ওরা আমাদের কঠিন লড়াইয়ে ফেলতে পারে।’
শুধু থ্রি স্টার নয়, আসামের স্থানীয় দলগুলোর লড়াকু ফুটবলও চোখ কেড়েছে আবাহনীর। অমলেশ সেন বলছেন, ‘এখানকার দলগুলো দারুণ লড়াকু। ৯০ মিনিট ফাইট করে। প্রচুর পাহাড়ি ছেলে খেলছে। এদের প্রচণ্ড দম। আমাদের যেকোনো ভালো দলের চেয়ে এরা কোনো অংশে কম নয়। ফিটনেস, স্ট্যামিনা ভালো। ফুটবল সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখে এখানকার সবাই।’
জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে দর্শকও হচ্ছে অনেক। বাংলাদেশ থেকে গিয়ে আসামে স্থায়ীভাবে বসবাস করা বাঙালিরা আবাহনীকে সমর্থন জোগাচ্ছেন। আজ বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় শুরু ম্যাচে ওই দর্শকেরা আবাহনীর জন্য বাড়তি প্রেরণাই।

No comments

Powered by Blogger.