চীনে গুঁড়ো দুধে আবার ক্ষতিকর মেলামিন

চীনে ৭৬ মেট্রিক টন গুঁড়ো দুধ আটক করা হয়েছে। ক্ষতিকর মাত্রায় রাসায়নিক উপাদান মেলামিন থাকায় এসব দুধ আটক করা হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চীনে দুই বছর আগে মেলামিন-মিশ্রিত দুধ খেয়ে ছয় শিশুর মৃত্যুর পর আবারও এ ঘটনা ঘটল। চীনের বিভিন্ন গণমাধ্যমে গতকাল শুক্রবার এ খবর প্রকাশ করা হয়।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গানসু প্রদেশ থেকে ৭৬ মেট্রিক টন গুঁড়ো দুধ আটক করা হয়। এর মধ্যে ১২ টন প্রক্রিয়াজাত করা দুধ রয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, এতে যে মাত্রায় মেলামিন গ্রহণযোগ্য, তার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি রয়েছে। এ ব্যাপারে আর বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
দ্য বেইজিং নিউজ জানায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জিলিন ও এর পাশের কিনঘাই প্রদেশেও মেলামিন-মিশ্রিত গুঁড়ো দুধ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় কিনঘাই প্রদেশের দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ডংইউয়ান ডেইরি ফ্যাক্টরির দুই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন কোম্পানির ‘লিগ্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ’ লিইউ ঝানফেং ও উৎপাদন ব্যবস্থাপক ওয়াং হেইফেং। এ ঘটনা তদন্তে জিলিন প্রদেশে তদন্ত শুরু হয়েছে।
গানসু প্রদেশের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ব্যুরোর উপপ্রধান ওয়াং ঝোংজি বলেন, মেলামিন-মিশ্রিত যেসব দুগ্ধজাত পণ্য বাজারজাত করা হয়েছে, তা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা হবে। তবে কী পরিমাণ পণ্য বাজারজাত করা হয়েছে তা জানাতে পারেননি তিনি।
চীন সরকার বলেছে, মেলামিন-যুক্ত সব দুগ্ধজাত পণ্য আটক করে ধ্বংস করা হবে। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যায়, এমন পণ্য এখনো বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে মেলামিনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। মেলামিন সাধারণত প্লাস্টিক, সার ও কংক্রিট তৈরিতে ব্যবহূত হয়। দুগ্ধজাত পণ্যে এর ব্যবহার অবৈধ হলেও দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মেলামিন ব্যবহার করে দুধে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করে থাকে। মেলামিনের কারণে কিডনিতে পাথর ও মূত্রজনিত নানা জটিলতা দেখা দেয়।
২০০৮ সালে চীনের ২২টি কোম্পানির উৎপাদিত দুগ্ধজাত পণ্যে মেলামিন পাওয়া যায়। এসব কোম্পানির দুধ পান করে কমপক্ষে ছয় শিশুর মৃত্যু হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ে আরও তিন লাখ শিশু। ওই সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা দুগ্ধজাত পণ্যও ফেরত নেয় চীন। ওই ঘটনায় ২১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে দুজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় জড়িত মূল প্রতিষ্ঠান সানলু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.