মেসিকেই ভয় জার্মানদের

২০০৬ বিশ্বকাপের বার্লিন স্টেডিয়ামের ছবিটা কি মনে আছে আপনার? টাইব্রেকে হেরে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ছে আর্জেন্টিনা। কোচ হোসে পেকারম্যান বেরিয়ে যাচ্ছেন ডাগ-আউট থেকে। বেঞ্চে বসে থাকা ১৯ বছর বয়সী খেলোয়াড়টি ঠিক যেন বুঝে উঠতে পারছেন না, তাঁর কী করা উচিত। ঘটমান ঘটনাপ্রবাহে একটু যেন হকচকিত!
সেই তরুণের বয়স এখন ২৩। সেদিনের উঠতি তারকাই আজ ফুটবল-বিশ্বের মহাতারকা। লিওনেল মেসি—গত বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে পেকারম্যান যাঁকে মাঠেই নামাননি শেষ পর্যন্ত। আজও আর্জেন্টাইনরা মনে করে, পেকারম্যানের এই সিদ্ধান্তই শেষ চারে যেতে দেয়নি আর্জেন্টিনাকে।
মেসির সামনে সুযোগ এসেছে চার বছর আগের আক্ষেপ মুছিয়ে দেওয়ার। কোয়ার্টার ফাইনালে সেই জার্মানিকেই যে পাচ্ছে আর্জেন্টিনা! ‘সেই জার্মানি’টা বলা বোধ হয় ভুল হলো। নিজেদের মাঠে গত বিশ্বকাপে যেমন খেলেছে জার্মানি, তার চেয়েও তারুণ্যের জয়গান গেয়ে চলা এই জার্মানি যেন আরও দুর্ধর্ষ। তার পরও মিরোস্লাভ ক্লোসারা সমীহ করছেন আর্জেন্টিনাকে। এই আর্জেন্টিনার মূল অস্ত্রটার নাম যে মেসি!
ইংল্যান্ডকে আগের ম্যাচে গুঁড়িয়ে দিয়ে আসার পর ক্লোসা বলেছেন, ‘আমরা আর্জেন্টিনা আর ইংল্যান্ডের তুলনা করতে চাই না। আর্জেন্টিনা অন্য মাপের একটা দল। মূল ব্যাপারটাই হলো পুরো একটা দল হয়ে খেলা, যেটি ইংল্যান্ডের ছিল না।’
গত বিশ্বকাপে রবার্তো আয়ালার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। একটা সময় তাদের সেমিফাইনাল নিশ্চিতই মনে হচ্ছিল। কিন্তু শেষ দিকে ৮০ মিনিটে গোল শোধ করে দেন ক্লোসা। ওই ম্যাচের কথা ভালোমতোই মনে আছে বিশ্বকাপে এক ডজন গোলের মালিক ক্লোসার, ‘এরপর আর্জেন্টিনার অনেক কিছুই পাল্টেছে। জার্মানিরও। মনে আছে, সেবার মেসি বেঞ্চেই বসে ছিল।’
এবারও মেসিকে নিষ্ক্রিয় রাখতে চায় জার্মানরা। সামি খেদিরা যেমন বলছেন, ‘মেসির বিপক্ষে খেলা কঠিন। পুরো ৯০ মিনিট ওকে আটকে রাখা কোনো খেলোয়াড়ের পক্ষে সম্ভব নয়। দলগত প্রচেষ্টা এবং সম্ভবত একাধিক খেলোয়াড়ই থাকবে ওকে আটকে রাখতে। তবে এও বলে রাখছি, আর্জেন্টিনাকে আমরা ভয় পাচ্ছি না, ওদের হারানো অবশ্যই সম্ভব।’

No comments

Powered by Blogger.