চীনা মুদ্রামান নীতি শিথিলের আভাস

চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত শনিবার আভাস দেয়, তারা চীনা মুদ্রা ইউয়ানের বিনিময় হার বাজারনির্ভর করে তোলার দিকে অগ্রসর হবে।
এর মানে হলো, চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রমান্বয়ে ইউয়ান-ডলার বিনিময় হারে হস্তক্ষেপ কমিয়ে আনবে।
এই খবরের জের ধরে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসেই এশিয়ার শেয়ারবাজারে যেমন উল্লম্ফন ঘটেছে, তেমনি বিভিন্ন মুদ্রার দরও বেড়েছে।
বর্তমানে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিদিনই মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের মান বেঁধে দেয়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য বেঁধে দেওয়া দরের থেকে সর্বোচ্চ দশমিক ৫ শতাংশ ওঠানামার সুযোগ আছে। তবে বাস্তবে তার প্রয়োগ খুব কমই হয়।
সোমবার ডলার-ইউয়ান বিনিময় হার শুক্রবারের মতোই অপরিবর্তিত রাখে সেন্ট্রাল ব্যাংক অব চায়না। এই হার হলো এক ডলার সমান ৬ দশমিক ৮৩ ইউয়ান বা রেনমিনবি। আর তাই বাজারে একপর্যায়ে ডলারপ্রতি দর হয় ৬ দশমিক ৮০ ডলার, যা গত ১৮ মাসের মধ্যে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের সর্বোচ্চ দর।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইতিমধ্যে মুদ্রা ব্যবসায়ীদের মধ্যে ধারণা ছড়িয়ে পড়েছে, চীন মুদ্রার মানকে শক্তিশালী করতে তেমন কোনো বাধা দেবে না।
পশ্চিমা দেশগুলো অনেক দিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, চীন সরকার কৃত্রিমভাবে ডলারের বিপরীতে মুদ্রার মানকে নামিয়ে রেখে রপ্তানিকারকদের বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে।
চীনের বিনিময় হার নীতিতে পরিবর্তনের আভাসের জের ধরে এশিয়ার প্রধান প্রধান শেয়ারবাজারে সার্বিক সূচক উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে।
দিনশেষে হংকংয়ের হেংসেং সূচক ৩ শতাংশ, জাপানের নিক্কি সূচক প্রায় আড়াই শতাংশ, সাংহাই সমন্বিত সূচক ২ দশমিক ৮০ শতাংশ, সিঙ্গাপুরের এসটি সূচক ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ এবং কোরিয়ার কসপি সূচক ১ দশমিক ৬২ শতাংশ হারে বেড়েছে।
অন্যদিকে ইউরোপের বাজারেও প্রধান সূচকগুলো ছিল ঊর্ধ্বমুখী। লন্ডনের এফটি সূচক ১ দশমিক ৪০ এবং প্যারিস ও ফ্রাঙ্কফুর্টের সূচকদ্বয় ১ দশমিক ৭০ শতাংশ হারে বেড়েছে।
বিশ্লেষকেরা আরও বলছেন, জি-২০ জোটের সম্মেলন সামনে রেখে চীন সরকারের পক্ষ থেকে মুদ্রা বিনিময় হার নীতি শিথিল করার ঘোষণা এসেছে। এ মাসের শেষেই কানাডার টরন্টোতে এই সম্মেলন হবে, যেখানে চীনের মুদ্রামান অন্যতম আলোচ্যসূচি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.