ভারতে ক্ষমতাসীন দলে বিতর্ক

মাওবাদীদের মোকাবিলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের কঠোর কৌশলের কড়া সমালোচনা করেছেন ভারতের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তাঁদের মধ্যে মধ্য প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং ও মনি শংকর আয়ারের মতো নেতাও রয়েছেন।
মাওবাদী সংকট মোকাবিলায় অংশীদারমূলক উন্নয়ন জরুরি—দিগ্বিজয় সিংয়ের এই মতামতের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেছেন মনি শংকর আয়ারের মতো অনেক জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা। অজিত যোগী ও সুবোধ কান্ত সাহের মতো কংগ্রেসের অনেক নেতাই মনে করেন, মাওবাদী হুমকি আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যার চেয়ে অনেক বেশি আর্থ-সামাজিক সমস্যা। মনি শংকর আয়ার মনে করছেন, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে সরকারের লৌহকঠিন ওই কৌশল শুধু উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যর্থ হতে যাচ্ছে না, এই কৌশল আদিবাসীদের বিক্ষুব্ধ করে তুলবে।
গত বুধবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে দরিদ্র আদিবাসীদের ক্ষমতায়ন ও তাদের মাওবাদী সংসর্গ থেকে মুক্ত করতে অংশীদারমূলক উন্নয়নের কথা বলেছেন মনি শংকর আয়ার। তিনি কঠোর ভাষায় বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর অপারেশন গ্রিন হান্ট বা ম্যান হান্ট নিয়ে একাগ্রচিত্ত।
মাওবাদী ইস্যুতে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য না দেওয়ার জন্য সহকর্মীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের পরিষ্কার নির্দেশনা সত্ত্বেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কৌশলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটালেন কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
গত বুধবার সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক নিবন্ধে পি চিদাম্বরমকে ‘বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উদ্ধত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন দিগ্বিজয় সিং। তিনি লেখেন, ‘১৯৮৫ সাল থেকেই আমি পি চিদাম্বরমকে চিনি, যখন আমরা দুজনেই পার্লামেন্টে নির্বাচিত হয়েছিলাম। তিনি সত্যিকার অর্থেই বুদ্ধিমান, স্পষ্টভাষী, সংকল্পবদ্ধ ও আন্তরিক রাজনীতিক। কিন্তু তিনি যখন তাঁর মনস্থির করে ফেলেন, তখন তিনি চূড়ান্তভাবে অনমনীয়। আমি অনেকবার তাঁর বুদ্ধিবৃত্তিক ঔদ্ধত্যের শিকার হয়েছিলাম। কিন্তু আমরা এখনো ভালো বন্ধু।’
দিগ্বিজয় সিং তাঁর নিবন্ধে বলেন, মাওবাদী সংকট মোকাবিলায় পি চিদাম্বরমের কৌশলের সঙ্গে তিনি একমত নন। ওই কৌশলে আক্রান্ত এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। মাওবাদী সংকটকে পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হিসেবে নিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
দিগ্বিজয় সিং আরও লেখেন, ‘আমি যখন তাঁর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম, তখন তিনি বলেছিলেন যে এটা তাঁর দায়িত্ব নয়।’
কংগ্রেসের গণমাধ্যম বিভাগের প্রধান জনার্দন দ্বিবেদী বলেন, কংগ্রেস একটি গণতান্ত্রিক দল। সবারই নিজের মতামত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের মতামত দলের অভ্যন্তরেই প্রকাশ করা উচিত।

No comments

Powered by Blogger.