আমাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে রক্তস্রোত বয়ে যাবে: বাকিয়েভ

কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট কুরমানবেক বাকিয়েভ দেশটির আন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হলে রক্তের স্রোত বয়ে যাবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার বলেছে, বাকিয়েভকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে, তা না হলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।
বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে পালিয়ে যাওয়ার পর গতকাল সোমবার প্রথম জনসমক্ষে আসেন বাকিয়েভ। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিজের গ্রাম তিয়েতে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে ভাষণ দেন তিনি। এ সময় তিনি বিরোধীদের কঠোর সমালোচনা করেন এবং ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন।
ভাষণের পর বাকিয়েভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) আমাকে গ্রেপ্তার করতে দিন, আমাকে হত্যা করতে দিন। আমি মনে করি, তাঁরা যদি সে চেষ্টা করে, তাহলে রক্তের স্রোত বয়ে যাবে।’
রাজধানীর বিশকেকে নিজের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীর গুলি এবং সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর গত মঙ্গলবার নিজের শক্ত ঘাঁটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চলে যান বাকিয়েভ।
গতকাল নিজের গ্রামে সমাবেশে বক্তৃতায় বাকিয়েভ জানান, তিনি এখনো দেশের বৈধ প্রেসিডেন্ট। তবে রাজধানী ছেড়ে চলে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আত্মগোপনে যাওয়ার কিছু কারণ ছিল। আপনারা জানেন, জোর করে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। আর সেটা শুরু হয় তালাস (উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর) থেকে এবং সবকিছুর জন্য আমাকেই দায়ী করা হচ্ছিল।’
বাকিয়েভ আরও বলেন, ‘আমিই প্রেসিডেন্ট। এ পদ থেকে আমাকে সরানোর ক্ষমতা বা অধিকার কারও নেই। এটা বিপ্লব নয়, জোর করে ক্ষমতা দখল।’
সম্ভাব্য আরও সহিংসতা ও রক্তক্ষয় এড়াতে শান্তিরক্ষী পাঠানোর জন্য জাতিসংঘের প্রতি আবারও আহ্বান জানান বাকিয়েভ।
তবে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোজা ওতুনবায়েভের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, বাকিয়েভকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধের উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করেছে নতুন সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপপ্রধান আলমাজবেক আতামবায়েভ বিশকেকে সাংবাদিকদের জানান, বাকিয়েভকে গ্রেপ্তার করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। তবে তিনি স্থানীয় জনগণকে মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করছেন। এ জন্য রক্তপাত এড়াতে বিশেষ অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে অভিযানের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে অস্বীকার করেন আতামবায়েভ।

No comments

Powered by Blogger.