জেরুজালেমে বসতি নির্মাণ বন্ধের দাবি নাকচ করেছে ইসরায়েল

পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদিদের জন্য নতুন করে বসতি নির্মাণ বন্ধের ক্রমবর্ধমান দাবি গত বুধবার নাকচ করে দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যান এ বসতি নির্মাণ বন্ধের দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বুধবার বলেছেন, পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের আরও বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তিপ্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক নয়। তবে এ ইস্যু নিয়ে মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো সংকটের কথা অস্বীকার করেন ওবামা।
গত সপ্তাহে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েল সফরকালে নতুন বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করে তেল আবিব। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরুর লক্ষ্যে জো বাইডেন ওই অঞ্চল সফর করেন।
বুধবার ইসরায়েল সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশনীতি-বিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাশটনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে লিবারম্যান বলেন, পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদি বসতি নির্মাণ থেকে ইসরায়েলকে বিরত রাখার দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এ দাবি অনেকভাবে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সুযোগ পেয়ে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে। এ ধরনের দাবি অযৌক্তিক।’
এদিকে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে ফক্স নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো সংকট সৃষ্টি হয়েছে কি না। জবাবে তিনি বলেন, ‘না।’
ওবামা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে ইসরায়েল ও এর জনগণের বিশেষ বন্ধন আছে, যা কখনো নষ্ট হবে না। কিন্তু বন্ধুদের মধ্যে কখনো কখনো মতভেদ দেখা দেয়...। এখানের মতভেদটি হচ্ছে, কীভাবে শান্তিপ্রক্রিয়াকে সামনের দিকে এগিয়ে নেব, তা নিয়ে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, নতুন বসতি স্থাপন নিয়ে ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে পদক্ষেপ নিয়েছেন, শান্তিপ্রক্রিয়ার জন্য তা সহায়ক নয়। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
ওবামা আরও বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আলোচনা আবার শুরুর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টা যাতে ব্যর্থ না হয়, সে ব্যাপারে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়েরই দায়িত্ব আছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ওবামা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোনো সংকটের কথা অস্বীকার করলেও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর শ্যালক হাগাই বিন আরজি তাঁকে ‘ইহুদিবিরোধী’ বলে অভিহিত করেছেন। এতে মার্কিন ও ইসরায়েল সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বেন আরজি বলেন, ‘এটা নয় যে ওবামা বিবিকে (বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডাকনাম) পছন্দ করেন না। আসলে তিনি ইসরায়েল রাষ্ট্রকে পছন্দ করেন না।’
বেন আরজি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে ইহুদিবিরোধী একজন প্রেসিডেন্ট থাকাটা আমাদের জন্য একটি পরীক্ষা। আমরা বলতে চাই, আমরা তা মেনে নেব না। চার হাজার বছরের পুরোনো জাতি আমরা।’
ওবামার ব্যাপারে বেন আরজির মন্তব্যের পর ভগ্নিপতি নেতানিয়াহু শ্যালকের কাছ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘বেনের মন্তব্যের সঙ্গে আমি পুরোপুরি দ্বিমত পোষণ করি।’

No comments

Powered by Blogger.