মাঠে নেমেই খেলোয়াড় চিনবেন ওয়াসিম

কোচ মাঠে নেমে তাঁর খেলোয়াড়দের নাম জেনে নেবেন! এ ছাড়া উপায় আর দেখছেন না খন্দকার ওয়াসিম ইকবাল। ব্রাদার্স কর্মকর্তারা এবার তাঁর হাতে ‘অচেনা’ একটা দলই যে তুলে দিচ্ছেন।
সাবেক তারকার কোনো খেদ নেই এতে, ‘এখন অনেকেরই নাম জানি না। তবে অনুশীলন (আসলে ট্রায়াল) শুরু করেছি, সবাইকে দেখে নিশ্চয়ই নাম জেনে যাব। বেশির ভাগ খেলোয়াড় অপরিচিত হলেও এটাকে বড় কোনো সমস্যা মনে করি না।’
এ কথা শুনে পাশে বসা ব্রাদার্স ম্যানেজার আমের খানের মুখে হাসি, ‘এমন দল আমরা এবার গড়েছি, ওয়াসিম ভাইয়ের কী করার আছে। কোনো রকমে একটা দল দাঁড় করালাম। তবে এখন বেশির ভাগ খেলোয়াড়কে না চিনলেও আস্তে আস্তে ঠিকই চিনবেন তিনি। গতবারও খেলোয়াড়দের চিনতেন না ওয়াসিম ভাই, এবারও চেনেন না। এ জন্য আসলে খারাপই লাগছে।’
ব্রাদার্সের অনুরোধে গত বছরই প্রথম কোচিং শুরু করেন ওয়াসিম। অনেক দিন ফুটবলের খোঁজখবর সেভাবে রাখতেন না। কিন্তু এবার তিনি তাঁর দলের খেলোয়াড়দের চিনবেন না, তা কী করে হয়! হয়তো হয় না, তবে বাস্তবতা বড় নিষ্ঠুর, সেটা মেনেই ওয়াসিম বলছেন, ‘নিজেকে শুধু ব্রাদার্সের কোচ মনে করি না, ব্রাদার্সের ঘরেরই একজন আমি। বর্তমানে ক্লাবের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। আমি হাঁড়ির খবর জানি। সে জন্য নতুন দল গড়ার ব্যাপারে আমার কোনো চাওয়া ছিল না।’
ব্রাদার্সের অবস্থা এবার এতই করুণ যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এর চেয়ে দুর্বল দল আর হয়নি। গত বি-লিগের কয়েকজন খেলোয়াড় নেওয়া হয়েছে, তবে অনেকেই নিজ নিজ দলে ছিলেন অনিয়মিত। সঙ্গে প্রথম বিভাগ, অনূর্ধ্ব-১৯ দলের তরুণদের যোগ করে ট্রায়ালের মাধ্যমে আরও কয়েকজনকে বাছাই করা হচ্ছে!
অনেকেই বলছেন, রাজনৈতিক পরিবর্তনে ক্লাবের কর্তৃত্ব দখল হওয়ায় এই পরিণতি। তবে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার দাবি, ‘দখল নয়, সমস্যাটা অনেক দিনের। ব্রাদার্সে সক্রিয় কোনো কমিটিই নেই তিন-চার বছর ধরে। ভালো দল করা যায়নি এসব কারণে। একজন সভাপতিই আমরা ঠিক করতে পারছি না অনেক চেষ্টা করে। দল হবে কী করে।’
গতবারের মাসুদ রানা ও লিটন খান ছাড়া আর কেউ নেই ব্রাদার্সের নতুন দলে। থেকে যাওয়া দুজনও সেরা একাদশের খেলোয়াড় ছিলেন না। এতেই বোঝা যায়, ব্রাদার্স এবার কতটা ভাঙা হাট। কর্মকর্তা সৈয়দ মাসুম আলীর প্রার্থনা তো এমনই হবে—‘দোয়া করবেন, আমরা যেন টিকে থাকতে পারি!’
ব্রাদার্সের পছন্দের তালিকায় আছেন: গোলে জাহাঙ্গীর (শেখ রাসেল), ইরান (রহমতগঞ্জ), রঘু (ইয়ংম্যান্স), করিম (অনূধ্ব-১৯)। রক্ষণে ইউসুফ (রাসেল), লিটন পাল (খুলনা আবাহনী), রিপন খান (ঢাকা মোহামেডান), মামুন (ফরাশগঞ্জ), পারভেজ (অগ্রণী ব্যাংক), অপু (মুক্তিযোদ্ধা) ও মাসুদ রানা। মাঝমাঠে নয়ন (আরামবাগ), তানভীর (রাসেল), ফয়সাল (ফরাশগঞ্জ), এমেকা (খুলনা আবাহনী), সাইফুল (মুক্তিযোদ্ধা), সবুজ (বিকেএসপি), লিটন খান। আক্রমণে বুলবুল (রাসেল), তরু (ঢাকা আবাহনী), মিলন (মুক্তিযোদ্ধা), দিদার (ইয়ংমেন্স)।

No comments

Powered by Blogger.