নির্ঘুম রাত কাটে রোহিঙ্গাদের by রাসেল চৌধুরী

বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে। বর্ষায় আরো বড় ধরনের দুর্যোগের আশঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের চোখেমুখে নতুন করে উদ্বেগ ও আতঙ্কের ছাপ ভেসে উঠেছে।
অপরদিকে বর্ষায় সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছেন প্রশাসন ও রোহিঙ্গা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও। এ ক’দিন তাদের বেশ তৎপরতা দেখা গেছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান জানান, বর্ষায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় কয়েকটি ধাপে কাজ করছে প্রশাসন। এক্ষেত্রে কর্মরত এনজিওগুলোকেও কাজে লাগানো হয়েছে। বৃষ্টির পানি চলাচলের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে কাজ চলছে। তিনি বলেন, সব প্রস্তুতির পরও ভয় থেকে যায়। কারণ, প্রতি বর্ষায় দালান কোটায় বসবাসকারী স্থানীয় লোকজনকেও প্রচুর সমস্যার কবলে পড়তে হয়। সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের কোনো দালান কোটা নেই। সবাই ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করে। তাই তাদের ঝুকিটা বেশি।
জানা যায়, গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়। গতকাল পর্যন্ত থেমে থেমে দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিতে এক নাজুক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় রোহিঙ্গারা। আতঙ্কিত রোহিঙ্গাদের দিকদ্বিক ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। এমনকি কয়েকটি ক্যামেপ রোহিঙ্গাদের বসতিও উপড়ে গেছে।
ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, যেকোনো দুর্যাগে মোকাবিলায় সকল সংস্থাকে নিয়ে কাজ করছে ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন। বালুখালী ক্যাম্পের এ ব্লকের বাসিন্দা আয়ুব আলী জানান, আশ্রয় নেয়া ঘরগুলো দুর্বল। বাতাস হলে নড়াচড়া করতে থাকে। এসময় ছেলেমেয়েদের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
থাইংখালী ক্যামেপর সি-ব্লকের রোহিঙ্গা নবাব মিয়া জানান, বৃষ্টি হলে পানি আটকানো যায় না। ওপর থেকে নিচের দিকে পানি নামলে ঘর স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায়। তাই রাতে না ঘুমিয়ে বসে থাকতে হয়।
পালংখালীর প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবসার চৌধুরী জানান, সম্প্রতি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় তার ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে আশ্রিত রোহিঙ্গারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাঁথা বালিশসহ ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভিজে গেছে। এমনকি অনেকের চাল, ডালও নষ্ট হয়েছে বলে তিনি জেনেছেন।
শুরু থেকে রোহিঙ্গাদের পাশে থাকা রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের সব ধরনের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। চলতি বর্ষা মোকাবেলায় প্রশাসন ও এনজিওগুলো তৎপর। তারপরও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারো হাত নেই। কয়েকদিনের বৃষ্টি ও হালকা বাতাসে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়েছেন বলেও জানান তিনি। বলেন, সম্বলিতভাবে কার্যক্রর পদক্ষেপ না নিলে সামনে রোহিঙ্গারা নতুন করে বিপর্যয়ে পড়বে।

No comments

Powered by Blogger.