মুরাদের স্বপ্ন পূরণ হবে কী?

মুরাদ আলম এবারে এসএসসি পরীক্ষায় লালবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে  বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার বাবা মমিনুল ইসলাম একজন দিন মজুর। যেদিন মুরাদের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়, তার তিন দিন আগেই বাবা মমিনুল শ্রমিক হিসেবে ধান কাটতে অন্য জেলায় গেছেন। মুরাদ ভালো ফলাফলের খবর মুঠোফোনে প্রথমে তার বাবাকেই জানিয়েছে। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও মুরাদ এর আগে পঞ্চম শ্রেণি এবং অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। তার বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ঘৃনই মাস্টারপাড়া গ্রামে।
জানা গেছে, মুরাদরা দুই ভাই। মুরাদ ছোট। তার বাবার দেড়শতক বসতভিটা ছাড়া আর কিছুই নেই। সেখানে দুইটি আধাপাকা ঘর রয়েছে। মুরাদ প্রথম শ্রেণি থেকেই মেধাবি ছাত্র। প্রতিটি ক্লাসেই ছিল তার রোল-১। সে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছে। তার বড় ভাই মোরশেদ আলম এবার রংপুর সরকারি কলেজে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে। সে অভাবের তাড়নায় ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করে মুরাদের লেখাপড়ায় সহযোগিতা করছে।’ মুরাদ বলে, ‘আমার লেখাপড়ায় বড় ভাইয়ের পাশাপাশি স্যারেরা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। যা কখনো ভুলতে পারবো না।’ মুরাদ লেখাপড়া শিখে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। মুরাদের মা মহসিনা বেগম বলেন, ‘সবায় কওছে তোর ছইল (ছেলে) ভালো এজাল্ট করচে। বেশি টাকা খরচ করি এখন ভালো জাগাত পড়াও। এখন চিন্তে করোচো ছইলোক ভালো জাগাত পড়বার টাকা কোনটে পাইম।’ লালবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল হোসেন শাহ্‌ বলেন, ‘এবার এসএসসিতে আমার বিদ্যালয় থেকে ৫৩ জন অংশ নিয়ে পাস করেছে ৪৫ জন। এর মধ্যে মুরাদসহ জিপিএ-৫ পেয়েছে  তিন জন। মুরাদ গরিব ঘরের সন্তান। সে অত্যন্ত মেধাবি। আমরা তাকে লেখাপড়ায় বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি। সে ভালো ফল করে বিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে।’ আগামীতে মুরাদ মানুষের সহযোগিতা পেলে দেশের জন্য কিছু একটা করতে পারবে বলে প্রধান শিক্ষক আশা করেন।

No comments

Powered by Blogger.