বৃটিশ কারি শিল্প নিয়ে সংশয়

প্রশিক্ষিত ও দক্ষ শেফের অভাবে আগামীতে বৃটেনে কারি রেস্তরাঁগুলোর শতকরা অর্ধেকই প্রায় স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃটেনে যেসব বাংলাদেশি এসব রেস্তরাঁর মালিক তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। ব্রেক্সিট সম্পাদন করতে গিয়ে বৃটিশ সরকার যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে ক্ষোভটা তা নিয়ে। উল্লেখ্য, বৃটেনে প্রায় ৬ হাজার কারি রেস্তরাঁ রয়েছে। এর মালিকদের অনেকেই ২০১৬ সালের জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেনে বেরিয়ে আসার গণভোটে ভোট দিয়েছিলেন। তাদেরকে তখনকার শীর্ষ স্থানীয় এমপিরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপ্রশিক্ষিত অভিবাসীদের পরিবর্তে বাংলাদেশি শেফদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। কিন্তু এখন ব্রেক্সিট নিয়ে যে সমঝোতা চলছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মতো দেশের পরিবর্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসীদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখানো হচ্ছে। এ জন্য বৃটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডস-এর প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আলী হতাশা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, অনেক বার আমরা এ নিয়ে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ব্রেক্সিটের পক্ষে অবস্থান নেয়া গুরুত্বপূর্ণ নেতা বরিস জনসন ও অন্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আমরা বলেছি, ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে শেফ নেয়ার কথা। তাদেরকে বলেছি বাজারে এমন শেফের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমাদের এ ধারণা কাজে আসছে বলে মনে হচ্ছে না। তার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, দক্ষ কর্মচারীর অভাবে বৃটেনের এমন রেস্তরাঁর প্রায় অর্ধেক স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে আগামী ১০ বছরের মধ্যে। এ নিয়ে তিনি বহু বছর ধরে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। বৃটিশ সরকারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। তাতে বৃটেনে যেতে চান এমন শেফদের জন্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত ভিসা ব্যবস্থা শিথিল করার আবেদন করা হয়েছে। প্রচলিত রান্নার ধরনে স্থানীয় স্টাফদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। ইনাম আলীর জন্ম বাংলাদেশের সিলেটে। তিনি ১৯৭০-এর দশকে পড়াশোনা করতে চলে যান বৃটেনে। সেখানে গিয়ে নর্থ ইস্ট সারে কলেজ অব টেকনোলজির সঙ্গে যৌথভাবে প্রতিষ্ঠা করেন লা রাজ একাডেমি। এখানে পরবর্তী প্রজন্মকে কারি শেফে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের মিঠু চৌধুরী বলেন, প্রতিদিনই একটা বা দুটো রেস্তরাঁ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর বেশির ভাগ কারণ হলো, তারা দক্ষ স্টাফ পাচ্ছে না।

No comments

Powered by Blogger.