ব্যাংকিং খাতে বড় পরিবর্তন আনছে চীন

ব্যাংকিং ও বীমা খাতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে চীন। সরকারের কেন্দ্রীয় কাঠামোতে বড় ধরনের রদবদলের অংশ হিসেবে এ পরিবর্তন আনা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আজীবন ক্ষমতায় রাখতে সংবিধান সংশোধনের পর এবার সরকারের কেন্দ্রীয় কাঠামোতে রদবদল ঘটাতে চলেছে চীন। এর অংশ হিসেবে দেশটির ব্যাংক ও বীমা খাত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা একীভূত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চীনের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের (এনপিসি) চলমান বার্ষিক অধিবেশনে এ বিষয়টি ছাড়াও নতুন কয়েকটি মন্ত্রণালয় গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। বিবিসি জানায়, অর্থনীতির ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করতে প্রেসিডেন্ট শি এ পরিকল্পনা করেছেন। ব্যাংকিং রেগুলেটরি কমিশন (সিবিআরসি) ও চীনা ইন্স্যুরেন্স রেগুলেটরি কমিশন (সিআইআরসি) একত্র করে একটি সুপার রেগুলেটর গঠন করা হবে। এটি চীনের ব্যাংকিং ও বীমা খাতকে নিয়ন্ত্রণ করবে।
দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অব চায়নার নিয়ন্ত্রণে যাবে কিছু কিছু কার্যক্রম। জিনপিংয়ের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা লিউ হি বলেন, রদবদলগুলো হবে খুবই কাঠামোগত, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সংস্থার অকার্যকর দিকগুলো দূর করা সম্ভব হবে। দ্বিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি বাতিল করে রোববার চীনের কংগ্রেসে একটি বিল অনুমোদন করেন ক্ষমতাসীন দলের আইনপ্রণেতারা। ফলে অনির্দিষ্ট মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকার পথে জিনপিংয়ের আর কোনো বাধা রইল না। জিনপিংয়ের সংস্কার পরিকল্পনার কারণে অর্থনীতির ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অতিরিক্ত ঋণ ও ঝুঁকি এড়ানো সহজ হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ঝু জিয়াওচুয়ান বলেন, আর্থিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ছিদ্রগুলো বন্ধ করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে এ খাতের আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করতে এ সংক্রান্ত আইনের ত্রুটিগুলোও সংশোধন করতে হবে। দেশের আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস করতে গত মাসে চীনের বৃহত্তম বীমা কোম্পানি ‘অ্যানবাং ইন্সুরেন্স গ্রুপ’র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বেইজিং। অ্যানবাং চীনের সবচেয়ে ধনী ও প্রতিষ্ঠিত বীমা কোম্পানিগুলোর একটি। নতুন মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে গঠন করা হবে নতুন কৃষি এবং পল্লী গ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। অন্যান্য নতুন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে থাকবে প্রাকৃতিক সম্পদ, অভিবাসন, সংস্কৃতি ও পর্যটন এবং পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এছাড়া মেধাস্বত্ব অধিকার ব্যুরোকে পুনর্গঠন করা হবে। অর্থনৈতিক কাঠামোসহ সরকারের এ ধরনের পরিবর্তনের পরিকল্পনা তিনটি বিষয়ের বিরুদ্ধে অব্যাহত লড়াইকে ত্বরান্বিত করবে। সেগুলো হল, অর্থনীতিতে বড় ধরনের ঝুঁকি হ্রাস, দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন প্রচারণা এবং দূষণ দূর করতে অব্যাহত সংগ্রাম।

No comments

Powered by Blogger.