গুয়ানতানামো বে নিয়ে ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা ট্রাম্পের

কিউবার গুয়ানতানামো বে এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটির কারাগার চালু রাখার একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এ আদেশের কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিতর্কিত ওই কারাগারটি বন্ধ করে দিতে চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ব্যর্থ হন; আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওমাবার পুরোপুরি বিপরীত সিদ্ধান্ত নিলেন।
৯/১১ হামলার পর থেকে গুয়ানতানামো বের স্থাপনাটিকে ‘শত্রুপরে যোদ্ধাদের’ আটক রাখার জন্য ব্যবহার করতে শুরু করে ওয়াশিংটন। বর্তমানে ওই কারাগারটিতে মাত্র ৪১ জন বন্দী আছেন। ওবামার আমলে ওই কারাগারের কয়েক শত বন্দীকে অন্যান্য জায়গায় স্থানান্তর করা হয়। এই কারাগারটি বন্ধ করে দেয়ার প্রক্রিয়া থামিয়ে দেয়ার আদেশ দেয়া হয়েছে বলে হোয়াইট হাউজও জানিয়েছে। যখন প্রয়োজন হবে তখন মার্কিন প্রশাসন শত্রুপরে যোদ্ধাদের এই কারাগারটিতে রাখতে পারবে বলেও জানিয়েছে তারা। মঙ্গলবারের স্টেট অব ইউনিয়ন ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘সন্ত্রাসীরা নিছক অপরাধী নয়। তারা নিষিদ্ধ শত্রুযোদ্ধা। বিদেশে যখন তারা ধরা পড়ে, তারা যেমন ধরনের সন্ত্রাসী তাদের সঙ্গে তেমনই ব্যবহার করা উচিত। অতীতে, আমরা বোকার মতো শত শত বিপজ্জনক সন্ত্রাসীকে ছেড়ে দিয়েছি, পরে লড়াইয়ের ময়দানে তাদের সাাৎ পেয়েছি।’ উদাহরণ হিসেবে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা আবু বকর আল বাগদাদির নাম উল্লেখ করেন তিনি। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে গুয়ানতানামো বে কারাগারে প্রথম বন্দীকে পাঠানো হয়েছিল। তারপর থেকে সাত শতাধিক বন্দীকে ওই কারাগারটিতে রাখা হয়েছিল, এদের অনেককেই কোনো অভিযোগ ছাড়াই বিনাবিচারে আটকে রাখা হয়েছিল। কোনো অভিযোগ ছাড়াই বিনা বিচারে আটক রাখা ও বন্দীদের নির্যাতন করার অভিযোগে নিয়ে কারাগারটির বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০০৯ সালে ওবামা এক আদেশে সই করে কারাগারটি এক বছরের মধ্যে বন্ধ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের আইনপ্রণেতাদের বাধার মুখে আট বছরেও নির্দেশ কার্যকর করতে পারেননি তিনি।
ট্রাম্পের নীতির পে ৬২ শতাংশ মার্কিনি
সিএনএন জানায়, স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থাপিত নীতি-পরিকল্পনার সঙ্গে ঐকমত্য রয়েছে ৬২ শতাংশ মার্কিনির। তবে তিনি এইসব নীতি-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সম কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তাদের একাংশের মনে। সামগ্রিকভাবে তার ভাষণকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন ৪৮ শতাংশ মার্কিনি। ট্রাম্পের ভাষণের পর পরিচালিত জরিপে এইসব তথ্য উঠে আসে। ভাষণের দুই ঘণ্টা পরেই এই জরিপ চালানো হয়। জরিপের পরিসংখ্যান বলছে, ২৯ শতাংশ মার্কিনি সরাসরি নেতিবাচকভাবে নিয়েছেন। ২২ শতাংশ কিছুটা ইতিবাচক ছিলেন। আর ৪৮ শতাংশ মার্কিন নাগরিক একে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। ভাষণের পর ৬২ শতাংশ মার্কিনি বলেছেন, ট্রাম্পের এমন নীতিতে সঠিক পথেই এগিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর ২৫ শতাংশের ভাষ্য এটি দেশকে ভুল পথে পরিচালিত করবে।

No comments

Powered by Blogger.