নাগাল্যান্ড নিয়ে নাকাল বিজেপি সরকার

উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগাল্যান্ড রাজ্যের সমস্যা দিন দিন জটিল হচ্ছে ভারত সরকারের জন্য। রাজ্যের বড় সব কটি রাজনৈতিক দল আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্তে অনড়। গতকাল মঙ্গলবার ১০ বিধায়ক ইস্তফা দিয়ে চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন। নাগাল্যান্ডের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের বর্জনের ঘোষণা দেয় গত সোমবার। রাজধানী কোহিমায় বিজেপি, কংগ্রেস, এনপিএফসহ অন্যান্য দলের নেতারা বৈঠক করে এমন সিদ্ধান্ত নেন। এতে সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয়। আসরে নামেন ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজেজু। তিনি সব পক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কেউ তাঁর আবেদনে কান দিতে নারাজ। আগামী ১৩ মার্চ রাজ্য বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে নতুন বিধানসভা গঠন জরুরি। কিন্তু শান্তিচুক্তির আগে ভোটে কোনো আগ্রহ নেই নাগাদের। গত রোববার নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএন (আইএম) ভোটে না দাঁড়ানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ‘নির্দেশ’ জারি করে। সোমবার রাতেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তথা বিজেপির জোট শরিক এনপিএফ নেতা টি আর জেইলিংও জানান, তিনি আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় বিধানসভা ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত।
গতকাল নাগা ন্যাশনাল ফ্রন্টের (এনপিএফ) ১০ বিধায়ক পদত্যাগ করেন। বিধায়কদের একজন তোকেহ ইয়েপথোমি বলেন, ‘“সলিউশন বিফোর ইলেকশন” (আগে শান্তি পরে ভোট) নামে যে জনদাবি উঠেছে, তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েই আমরা পদত্যাগ করলাম। আগে নাগাল্যান্ডের সমস্যার সমাধান চাই।’ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন এনএসসিএনরে সঙ্গে ভারত সরকারের শান্তি আলোচনা চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সমাধান হয়নি। ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসে নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল পিবি আচারিয়া দাবি করেছিলেন, ‘নাগা শান্তিচুক্তি এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। সাত দশক পর শান্তি ফিরছে নাগাল্যান্ডে।’ তবে সরকারের এসব প্রতিশ্রুতিতে মন গলেনি নাগাদের। এখন দেখার বিষয়, নাগাল্যান্ডের সর্বদলীয় এই সিদ্ধান্তের পর নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয়। তবে নাগাদের নাগালিম বা বৃহত্তর নাগাল্যান্ডের দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তর-পূর্ব ভারতের আরেক রাজ্য আসামসহ বিভিন্ন রাজ্যে দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা।

No comments

Powered by Blogger.