সৌদি আরবে সংস্কারের ঘোষণা

গেল বছর অক্টোবরের শেষ দিকে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বিনিয়োগ বিষয়ে একটি বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন হয়। দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সেখানে বলেন, তিনি তাঁর দেশকে রক্ষণশীল ইসলামের দেশ থেকে সহনশীল ইসলামের দেশে পরিণত করবেন। এর ঠিক চার মাস আগে, গত জুন মাসে বিন সালমানকে যুবরাজ ঘোষণা করেন তাঁর বাবা বাদশাহ সালমান। তারপর থেকেই যুবরাজ মোহাম্মদ সংস্কার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের নানা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। সেপ্টেম্বরে ঘোষণা করা হয়, এ বছরের জুন থেকে সৌদি নারীরা গাড়ি চালানোর অনুমতি পাবেন। অক্টোবরের শেষে বলা হয়, নতুন বছরের শুরু থেকেই সৌদি নারীরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে পারবেন। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে কমিটি গঠনের ঘোষণা দিয়ে গত ৫ নভেম্বর সৌদি আরবের বাদশাহ এক ডিক্রি জারি করেন।
এই কমিটির প্রধান যুবরাজ মোহাম্মদ। তারপর ধনাঢ্য প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালালসহ ডজনখানেক প্রিন্স ও সরকারের জ্যেষ্ঠ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে আটক করা হয়। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, সৌদি আরবের শাসনব্যবস্থায় যুবরাজের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই এই ধরপাকড়। সৌদি আরবের সংস্কারের জন্য মোহাম্মদ বিন সালমান ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্সের দায়িত্ব পালনের সময় থেকেই সরকারের ব্যয় কমিয়ে আনতে তৎপর ছিলেন। এ ছাড়া ইয়েমেনে সামরিক অভিযান পরিচালনা ও কাতারের ওপর সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের পেছনে ৩২ বছর বয়সী এই যুবরাজের ভূমিকা রয়েছে বলেও মনে করা হয়। তাঁর সম্পর্কে সীমাহীন বিলাসিতার প্রচারণা আছে। তিনি ২০১৫ সালে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরের কাছে শাঁতু লুই ফোরটিন নামের একটি বিলাসবহুল বাড়ি ৩০ কোটি ডলারে কেনেন। ৫৭ একর জমির ওপর নির্মিত এই বাড়িটি আসলে উনিশ শতকের একটি দুর্গ। ২০১৬ সালে ফ্রান্সে ছুটি কাটাতে গিয়ে তিনি ৪৫ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থের বিনিময়ে একটি বিলাসবহুল ইয়ট কেনেন।

No comments

Powered by Blogger.