পরাজয় মেনে নেয়ার আগাম অঙ্গীকার

রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রধান দলগুলোর তিন মেয়র প্রার্থী বুধবার ‘নাগরিক অধিকার’ বিষয়ক এক সংলাপে হাজির হয়েছিলেন। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে ফলাফল যাই হোক না কেন তা মেনে নেয়ার আগাম অঙ্গীকার করলেন। একই সঙ্গে পরাজিত হওয়ার পর তারা নির্বাচিত মেয়রকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন। মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে রংপুর নগরীকে তারা কীভাবে সাজাবেন সে বিষয়টি সংক্ষেপে তুলে ধরেন। মেয়র প্রার্থীরা এ সময় শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দেন। বেলা ১১টায় নগরীর একটি কনভেনশন হলে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালে সংলাপের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চিফ অব পার্টি কেটি ক্রোক। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপ-পরিচালক আমিনুল ইসলামসহ তিন মেয়র প্রার্থী। আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ও পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত প্রার্থীর জন্য তাদের করণীয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে এই তিন মেয়র প্রার্থী বলেন, নির্বাচনে যিনিই জয়লাভ করুন না কেন আমরা পরাজিতরা নির্বাচিত মেয়রকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি। নির্বাচন যাতে অবাধ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন এই তিন মেয়র প্রার্থী। নির্বাচনে মূল তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেছেন, আমি নির্বাচিত হলে নগরীর অনুন্নত এলাকাগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করব। নগরীর বস্তিবাসীদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। নগরীর যেখানে রাস্তাঘাট নেই বা দুর্বল সেখানে গুরুত্ব দেয়া হবে। আমি রপুর সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান হিসেবে তিন বছর ছিলাম। সাধ্যমতো জনগণের জন্য কাজ করেছি। নাগরিক জীবনের সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করেছি। আগামীতে মেয়র নির্বাচিত হলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে রংপুরের ‘এরশাদ প্রিয়’ মানুষের যে আকাক্সক্ষা তা পূরণে গুরুত্ব দেব। বিএনপির মেয়র প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা বলেছেন, অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করতে হবে। সবাইকে সমান অধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, আমি মেয়র নির্বাচিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত করার জন্য উদ্যোগ নেব। নগরবাসীর যোগাযোগ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থায় নানামুখী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করব। সেই সঙ্গে নগরীর অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া ওয়ার্ডগুলো যেন স্বাস্থ্যসেবা পায় সেজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে স্যাটেলাইট ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেব। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু বলেছেন, আমি মেয়র থাকার সময় যে উন্নয়ন করেছি আগের ১৬ বছরেও তা হয়নি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নবগঠিত রংপুর সিটি কর্পোরেশনের জন্য স্বাস্থ্য, পয়ঃনিষ্কাশন, যোগাযোগ, শিক্ষা, বিনোদন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, প্রযুক্তিগত নানা সুবিধা দেয়া উদ্যোগ গ্রহণ করে যে আর্থিক বরাদ্দ দিয়েছিল সেসব কাজ কিছু শেষ হয়েছে। কিছু চলমান সেগুলোর সমাপ্ত করব। নাগরিক জীবনের সব সুযোগ-সুবিধাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এগিয়ে নেব। তিনি বলেন, রংপুরে যে উন্নয়ন হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়েই হয়েছে। তাকে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত করার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ঝন্টু বলেন, পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হলে রংপুরকে আধুনিক নগরীতে রূপ দেব। সংলাপে সুশীল সামাজের প্রতিনিধি ছাড়াও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হুসেইন মকবুল শাহরিয়ার, বাসদের প্রার্থী আবদুল কুদ্দুস, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের এটিএম গোলাম মোস্তফা ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. সেলিম আকতারকে ওই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.