২০০ মিটারে সেরা রউফ-শিরিন

জাতীয় অ্যাথলেটিকস আসে তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে। এই একটি মিটেই পদক জয়ের পাশাপাশি বাহবা পান দেশের অ্যাথলেটরা। শুক্রবার শুরু হওয়া জাতীয় অ্যাথলেটিকসও আবদুর রউফ ও শিরিন আক্তারের জন্য তেমনটাই হয়েছে। এশিয়ান অ্যাথলেটিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দাহলান আল হামাদের উপস্থিতিতে নিজেদের সেরা প্রমাণ করেছেন এই দু’অ্যাথলেট। ২০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণপদক জিতেছেন তারা। পুরুষদের ২০০ মিটার স্প্রিন্টে প্রথম খেলেই সোনা জিতে নিয়েছেন নৌবাহিনীর আবদুর রউফ। চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় সামার অ্যাথলেটিকসে খেলতে পারেননি। তখন থেকেই মনে জেদ ছিল সিনিয়র মিটে নিজের কৃতিত্ব দেখাবেন। ২১.৭৯ সেকেন্ড সময় নিয়ে জিতেছেন স্বর্ণপদক। বাবা আবদুর রহমান সরকারি চাকরি করেন। দু’ভাইয়ের মধ্যে বড় রউফ। প্রথম খেলতে এসে ১০০ মিটার ইভেন্টে দেশের দ্রুততম মানব মেজবাহ আহমেদের কাছে হার মানতে হয়েছিল তাকে। এবার অবশ্য আরও বেশি দৃঢ় এবং প্রতিজ্ঞ। রউফের কথায়, ‘আমার প্রিয় ইভেন্টই হল ১০০ ও ২০০ মিটার। একটি স্বর্ণ জেতা হয়েছে। এবার ১০০ মিটারেও সোনা চাই।’ তিনি যোগ করেন, ‘২০০ মিটারে স্বর্ণ জিততে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তিন মাসের প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে এর মধ্যেও ২৫ দিন অসুস্থ ছিলাম।’ বাকুতে ইসলামিক সলিডারিটি গেমস ও ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে খেলা রউফ সাউথ এশিয়ান গেমসে দেশের হয়ে স্বর্ণপদক জিততে চান। অন্যদিকে ২০০ মিটার স্প্রিন্টেও সেরা দেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার। শুধু সেরা নয়, নিজের অন্যতম এই ইভেন্টে হ্যাটট্রিক স্বর্ণ জিতে নিয়েছেন তিনি। ২৫.৫৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে মিটে প্রথম সোনা জেতেন নৌবাহিনীর এই অ্যাথলেট।
তবে এতেও খুশি নন শিরিন। তার কথায়, ‘এই স্কোরে আমি খুশি নই। তারপরও আমি তাকিয়ে রয়েছি আমার প্রিয় ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্টের দিকে। ওটাই যে আমার মূল ইভেন্ট। আশা করি সব ঠিক থাকলে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ষষ্ঠবারের মতো স্বর্ণপদক জিততে পারব।’ তিনি যোগ করেন, ‘যদিও আমার নৌবাহিনীর শর্তেই ২০০ মিটারে খেলেছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’ এদিকে বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ বলে কাল এক সংবাদ সম্মেলনে জানান এশিয়ান অ্যাথলেটিকসের সভাপতি দাহলান। তবে বাংলাদেশকে ট্র্যাকসহ টেকনিক্যাল, টেকনিক্যাল সহায়তা দেয়ারও আশ্বাস প্রদান করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে অ্যাথলেটিকসের উন্নয়নের জন্য তৃণমূলেই জোর দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। দাহলানের কথায়, ‘তৃণমূল থেকে অ্যাথলেট তুলে আনতে হবে। শুধু তুলে আনলে হবে না, প্রতিভাবানদের ধরে রাখার দায়িত্বও নিতে হবে ফেডারেশনকে। বিশেষ করে স্কুল পর্যায় থেকে প্রতিভাবান অ্যাথলেট বাছাই করে আনতে হবে। স্কুল পর্যায়ে কাজ না করলে ভালো মানের অ্যাথলেট কখনই পাওয়া সম্ভব নয়।’ তিনি যোগ করেন, ‘এক সময় অ্যাথলেটিকসে যুক্তরাষ্ট্র প্রভাব বিস্তার করত, এখন কিন্তু জ্যামাইকার অ্যাথলেটরা ভালো করছেন। এটা প্রজন্মের পরিবর্তন। তাই জাতীয় পর্যায়ে টেলেন্ট হান্ট প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। ভালো মানের অ্যাথলেটদের ধরে রাখতে হবে।’ তবে বাংলাদেশ শেখ কামাল অ্যাথলেটিক একাডেমিকে পূর্ণাঙ্গ একাডেমি হিসেবে গড়ে তোলা, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে আরডিসি, ট্র্যাক স্থাপন এবং দেশের দরিদ্র অ্যাথলেটদের আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদানের জন্য দাহলানের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে ফেডারেশনের সভাপতি এএসএম আলী কবির জানান।’

No comments

Powered by Blogger.