৪০ হাজার রোহিঙ্গা দেশ ছাড়া করতে চায় ভারত

ভারতে বসবাসরত প্রায় ৪০ হাজার অবৈধ রোহিঙ্গা মুসলিমকে ফেরত পাঠাতে চায় মোদি সরকার। এজন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। এ উদ্দেশে একটি টাস্কফোর্স গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে। শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এসব তথ্য জানায়। ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কেএস ধাতওয়ালিয়া বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। উপযুক্ত সময়ে বিষয়টি আরও স্পষ্টভাবে জানা যাবে। ভারতের দাবি, দেশটিতে বসবাসরত মাত্র ১৪ হাজার রোহিঙ্গা জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার নিবন্ধিত। বাকি রোহিঙ্গারা অবৈধ। তাই এদের দেশছাড়া করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভারত জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশনের সিগনেটরি রাষ্ট্র নয়। জানা যায়, দমন-পীড়নের শিকার হয়ে ১৯৯০ সাল থেকে বৌদ্ধ সংখ্যাঘরিষ্ঠ মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমরা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ভারতের দাবি, মিয়ানমার থেকে ভারতে এসে বসবাস করা রোহিঙ্গা মুসলমানের সংখ্যা কমপক্ষে ৪০ হাজার। সমুদ্র পথ ছাড়াও চীন ও বাংলাদেশ হয়েও রোহিঙ্গারা ভারতে প্রবেশ করে। রোহিঙ্গারা মূলত ভারতের জম্মু, উত্তর প্রদেশ, হারিয়ানা এবং উত্তরে দিল্লিতে, দক্ষিণে হায়দরাবাদে এবং পশ্চিমে রাজস্থানে বসবাস করছে। বুধবার ভারতের রাজ্যসভায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের ফেরত পাঠাতে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরণ রিজিজু। অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করা এ মুসলিমদের শনাক্ত ও ফেরত পাঠাতে জেলা পর্যায়ে ওই টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিজিজু সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মিয়ানমার সফর করেন। তবে সেখানে তিনি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন কিনা তা স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে তাৎক্ষণিকভাবে মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত বা ফেরত পাঠানো হবে ‘একেবারেই অযৌক্তিক’। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে নয়াদিল্লি সাহায্য করছে।

No comments

Powered by Blogger.