সুনামগঞ্জের সাত উপজেলায় প্রাইমারি স্কুলের পরীক্ষা স্থগিত

সুনামগঞ্জে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। পাউবোর দেয়া তথ্যমতে শনিবার সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে বন্যার পানি বিভিন্ন স্কুল ও স্কুল সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশ করায় জেলার সাতটি উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দোয়ারাবাজার, দিরাই ও  ধর্মপাশা উপজেলায় পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বায়োজীদ খান। তিনি যুগান্তরকে বলেন, উল্লেখিত উপজেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আজ শনিবার ও আগামীকাল রোববারের  পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তঅ বলেন, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্কুল ও স্কুল সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দু'টি বিষয়ে পরীক্ষা আবার নেয়া হবে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তের ওপাড় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতের কারণে সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার পরিমাপ অনুযায়ী সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। রাতে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পাউবোর দেয়া তথ্যমতে আজ শনিবার সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় জেলার সবকটি নদ-নদী ও হাওরে পানি বাড়ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এদিকে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার পানিতে কয়েকশ পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মাছচাষীরা। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিরখলা সড়ক ঢলের পানিতে ডুবে যাওয়ায় সুনামগঞ্জ তাহিরপুরে সড়কে সরাসরি যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ফতেহপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের বেশ কয়টি অংশ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বন্যায় জেলার রোপা আমনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জাহেদুল হক যুগান্তরকে জানান, রোপা-আমন যা রোপন করা হয়েছিল তা পানিতে তলিয়ে গেছে। দু’একদিনের মধ্যে পানি না কমলে ব্যাপক ক্ষতি হবে। এ পর্যন্ত জেলার তাহিরপুর, দোয়ারা বাজার, বিশ্বম্ভরপুর ও সদর উপজেলার প্রায় এক হাজার হেক্টর রোপা-আমন পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি প্রশাসনের রয়েছে। যেখানে যা প্রয়োজন সেখানে সেরকম সাহায্য সহযোগিতা করা হবে। ইতোমধ্যে সার্বিক পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের সব স্থরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সেভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.