ভারতের ভূখণ্ডে আমরা ঢুকলে ‘চরম বিশৃঙ্খলা’ হবে: চীন

চীন হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তাদের সৈন্যরা যদি ভারতের সীমান্তে ঢুকে পড়ে তাহলে একটা ‘চরম বিশৃঙ্খলা’ তৈরি হবে। মঙ্গলবার এ বার্তা দিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ভারত-চীন-ভুটান সীমান্তে দোকালাম এলাকায় চীনের রাস্তা তৈরি করার ব্যাপারটি তাদের (ভারত) জন্য হুমকি তৈরি করেছে বলে যুক্তি দেখাচ্ছে নয়াদিল্লি। তবে তাদের এ দাবি হাস্যকর বলে মনে করছে চীন। চীন আরও বলেছে, কোনো ব্যক্তি বা দেশকে তাদের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করতে দেবে না তারা। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া ছুন ইং বলেন, চীনের রাস্তা নির্মাণের ঘটনার অজুহাতে ভারত অন্যায়ভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছে। তাদের দেখানো কারণটি হাস্যকর এবং প্রকৃত উদ্দেশ্যও পরিষ্কার। তিনি আরও বলেন, আপনারা ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারেন। আর যদি আমরা ভারতের হাস্যকর যুক্তি সহ্য করি তাহলে কোনো কাজ অপছন্দ হলেই যে কেউ তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ঢোকার সাহস পাবে। সাম্প্রতিক এ বিষয়টিকে যদি চীন হুমকি মনে করে, তাহলে কি দেশটি ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশ করবে? আর যদি সত্যিই প্রবেশ করে তাহলে কি বড় বিশৃঙ্খলা হবে না- প্রশ্ন তোলেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র। খবর দি ইকোনমিক টাইমস, সিআরআই অনলাইন ও এনডিটিভির। ভারত আগ্রাসী নয় এবং সীমান্ত বৃদ্ধিতেও তারা উচ্চাকাক্সক্ষী নয়- ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের এমন মন্তব্যের জেরে হুয়া ছুন জানান, চীন শান্তিকে ভালোবাসে এবং দৃঢ়ভাবে শান্তি বজায় রাখে। এ সময় তিনি সংকট নিরসনে দোকালাম থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানান। সম্প্রতি চীন-ভারত সীমান্তে দু’পক্ষের অপ্রীতিকর ঘটনার নিশ্চিত তথ্য পেয়েছে বলেও জানিয়েছে বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ছুন ইং বেইজিংয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্ট চীনের সীমান্তরক্ষী চীন-ভারত সীমান্তের পশ্চিমাঞ্চলের বেন গং অঞ্চলের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা চীনের অংশে নিয়মিত টহলের সময় ভারতের সীমান্তরক্ষীদের আক্রমণের শিকার হয়। এতে চীনা সীমান্তরক্ষী আহত হন। হুয়া উল্লেখ করেন, ভারতের এ আচরণ সীমান্ত এলাকায় শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে মতৈক্যের ক্ষতি ঘটিয়েছে। এতে এ দুটি দেশের মধ্যকার সীমান্তের পশ্চিমাঞ্চলের পরিস্থিতি উত্তেজনাসংকুল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ভারতের আচরণে চীন প্রবলভাবে অসন্তুষ্ট। এ ব্যাপারে ভারতকে কঠোর মনোভাবের কথা জানিয়ে দিয়েছে তার দেশ। ভারতকে ১৯৫৯ সালে প্রণীত বাস্তব নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং দু’দেশের সংশ্লিষ্ট চুক্তি মেনে চলার তাগিদও দিয়েছে তারা। দোকালাম চীনে দংলাং নামে পরিচিত। চীনের ওই কাজের বিরোধিতা করে ভুটান। আর ভারত তাতে সমর্থন দেয়ায় উত্তেজনা শুরু হয়। এ রাস্তাটি যদি তৈরি হয়, তাহলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে একটা যোগযোগ স্থাপনের উপায় হবে চীনের। মূল ভূখণ্ড থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে এ রাস্তা হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ভারত। এ সড়ক কৌশলগতভাবে ভারতকে কিছুটা অরক্ষিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.