তিস্তার পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমটার উপরে প্রবাহিত

উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের ফলে তিস্তা নদী তীরের কয়েকটি উপজেলার নিম্নঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে তিস্তার তীরবর্তী বসতি মানুষদের মধ্যে। ইতিমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে বেশ কিছু এলাকা ও ঘর-বাড়ি। সোমবার সকাল ৯টা থেকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৪০ মিটার) ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের সব (৪৪টি) জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। রোবাবার বিকাল ৬টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাত ১২টার পর তা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পায়। একদিকে মুষলধারে বৃষ্টি অন্যদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে চরম বিপাকে পড়েছে তিস্তার পাড়ের লোকজন। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। অনেকেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২৫টি চর ও গ্রামের ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছে। এছাড়া পাশ্ববর্তী লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদী বেষ্টিত চর ও গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।
তিস্তা সংলগ্ন চরাঞ্চলের নিচু অঞ্চলের বসতভিটায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। নিচু অঞ্চলের লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন। ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ফরেস্টের চরের অধিকাংশ বাড়িতে হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। খালিশা চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার জানান, পুর্ব বাইপুকুরে বসত ঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পুর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, ঝাড়সিংহেস্বর এলাকার তিস্তার চরাঞ্চলের বসত বাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উজানের ঢলের কারণে তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে সোমবার সকাল ৬টায় বিপদসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এরপর সকাল ৯টায় তা বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার আশঙ্কা করছেন তিনি। ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রতি সার্বিক নজর আছে প্রশাসনের এবং এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.