‘সর্বত্র এক ধরনের নীরবতা মানুষকে গ্রাস করেছে’ -মাহফুজউল্লাহ

বিশিষ্ট সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ বলেছেন এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতার চাদর পুরো দেশকে গ্রাস করে রেখেছে। পথে মানুষ নিরাপদ নয়, শিক্ষকের কাছে ছাত্রী নিরাপদ নয়, এমনকি পুলিশের কাছেও মানুষ নিরাপদ নয়। বাংলাদেশে মানবাধিকার লুণ্ঠিত এটা যদি কেউ অস্বীকার করতে চান তাহলে সে বোকার রাজ্যে বাস করছেন। মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে যারা কাজ করেন তারা সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন কতটা স্বাধীনতা ভোগ করছেন। এটি বাইরে থেকে বুঝার কোন উপায় নেই। কারণ ছোট ছোট যে সমস্ত চাপ আসে বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে, বক্তব্য প্রচারের ক্ষেত্রে, বক্তব্য কেটে দেয়ার ক্ষেত্রে ও বক্তব্য পুনঃপ্রচার না করবার ক্ষেত্রে যে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা টেলিফোনে আসে সেগুলো গণমাধ্যমের কর্মীরা জানেন। একটি সমাজে যখন অর্থনৈতিক বৈষম্য ব্যাপক হয়। আইনের শাসন লুণ্ঠিত হয় এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য কোন জায়গা থাকে না তখন সমাজে এসব ঘটনা ঘটতে থাকে। অন্যদিকে সরকার যখন কর্তত্ববাদী হয়ে উঠে। প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উঠে। তখন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সরকারের কাছে অর্থহীন হয়ে যায়। কি করে প্রতিপক্ষকে দমন করতে হবে সেটাই তাদের কাছে খুব বড় বিষয় হয়। যে কারণে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের একমাত্র প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক সংগঠন হচ্ছে বিএনপি। যদিও বিএনপি সংসদে নেই। রাজপথে যেতে পারেছে না। সভা-সমিতি করতে পারছে না। তারপরও সরকার বিএনপিকে বিরাট প্রতিপক্ষ হিসেবে কল্পনা করে। তাদের কথাবার্তায় এ বিষয়টি পরিষ্কার হয়। বিদেশীদের ওপর হামলা বিষয়ে মাহফুজউল্লাহ বলেন, সকল ঘটনাকে রাজনৈতিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা বোধ হয় ঠিক হবে না। অন্যান্য বিষয়ও এর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে সঠিকভাবে তদন্ত করে অন্যের ওপর দোষ না চাপিয়ে সত্যিকারের অপরাধীদের জনগণের সামনে তুলে ধরা। একটি জিনিস সরকার বুঝতে পারছে না যে গণতন্ত্র টিকে থাকে ধারণার উপরে। বর্তমান সরকার সম্পর্কে মানুষের ধারণা যেভাবে বদলে গেছে, তদন্ত সম্পর্কে যেভাবে ধারণা বদলে গেছেÑ সে কারণে আজকে সরকার যত কথাই বলুক সরকার কিন্তু তার অবস্থানকে পরিষ্কার করতে পারছে না। সর্বত্রই এক ধরনের নীরবতাও মানুষকে গ্রাস করেছে। নীরবতা যখন মানুষকে গ্রাস করে তখন হঠাৎ করে বিস্ফোরণ ঘটে। তখন এটি আর কেউ সামলাতে পারে না। পৃথিবীর অনেক দেশে এরকম ঘটনা ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন মাহফুজউল্লাহ।

No comments

Powered by Blogger.