পিয়ন থেকে স্বৈরশাসক

কাঁধে ব্যাগ, হাতে চিঠির বান্ডেল, দেশী ধাঁচের এক জোড়া সাধারণ চপ্পল পায়ে বার্মার এক মুল্লুক থেকে আরেক মুল্লুকে ছুটে বেড়িয়েছেন। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বাড়ি বাড়ি চিঠি বিলি করে বেড়াতেন মিয়ানমারের এক সময়ের স্বৈরশাসক থান শোয়ে। যার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ‘ডাক পিয়ন’ পেশার মাধ্যমে। ১৯৫৩ সালের কথা। অভাবের তাড়নায় তখনকার আমলের ‘রানার’ পদে পোস্ট অফিসের চাকরিতে যোগ দেন থান শোয়ে। ২০০৬ সালে ‘দেশকাঁপানো’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার এক মেয়ের বিয়ের সময় ‘বর্তমান থান ও পিয়ন জীবন’ নামে ইউটিউবে একটি ভিডিও চিত্র ফাঁস হয়, যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। একজন দেশ শাসকের কেতাদুরস্ত জীবন ও পোড় খাওয়া এক সাধারণ ‘ডাক পিয়ন জীবনে’র মধ্যে কতটা তফাত সেটাই তুলে ধরা হয়েছিল ওই ভিডিও চিত্রে। ভিডিওটিতে দেখা গেছে, একটি রাজকীয় প্লেটে কেক খাচ্ছেন সাবেক স্বৈরশাসক থান শোয়ে। তারপরই তুলে ধরা হয়েছে তার ডাকপিয়ন জীবনের প্রামাণ্য চিত্র।
থান শোয়ে ১৯৩৩ সালে বার্মার মিনজু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে ডাক পিয়ন হিসেবে পেশা জীবন শুরু করেন তিনি। মাত্র ২০ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ক্যারিয়ারের ১০ বছর পরেই তাকে স্পেশাল ব্রাঞ্চ ‘শিক্ষা ও মনস্তাত্ত্বিক বিভাগে’ বদলি করা হয়। কায়িন গেরিলা গ্রুপকে হটিয়ে দিতে সমর্থ হলে তাকে ‘ক্যাপটেন’ পদমর্যাদা দেয়া হয়। ১৯৬২ সালে জেনারেল নি উইন ক্ষমতায় এলে শোয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেলের মর্যাদা পান। এরপর তিনি ‘ভাইস কমান্ডার ইন চিফ’ হন। ৪ বছর পরে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল শ মং স্বাস্থ্যগত কারণে পদত্যাগ করলে শোয়ে সিনিয়র জেনারেল এবং সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফের মর্যাদা পান। ২৩ এপ্রিল ১৯৯২ সাল থেকে ৩০ মার্চ ২০১১ পর্যন্ত মিয়ানমারের স্বৈরশাসক ছিলেন থান শোয়ে। খবর মিয়ানমার টাইমস অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.