২০৩০ সালে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব- টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য (এসডিজি)

সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য এমডিজি শেষ, এবার আসল টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-এসডিজি। জাতিসংঘ সারা বিশ্বের উন্নয়ন টেকসই করতে ১৭টি লক্ষ্য (এসডিজি) নির্ধারণ করেছে। এর মেয়াদ আগামী ১৫ বছর, অর্থাৎ ২০৩০ সাল। প্রতিটির ক্ষেত্রে রয়েছে আবার একাধিক সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য। এসডিজির এই লক্ষ্যগুলো প্রথম আলোতে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ দ্বিতীয় লক্ষ্য—খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি উন্নয়ন নিশ্চিত করে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলা।
বর্তমান বিশ্বের প্রতি নয়জনে একজন অপুষ্টির শিকার। এ হিসাবে অপুষ্টির শিকার মোট জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৭৯ কোটি ৫০ লাখ। এ জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশের বসবাস এশিয়া মহাদেশে। সারা বিশ্বে প্রাথমিক পর্যায়ে পড়ালেখা করে এমন ৬ কোটি ৬০ লাখ শিশু পেটে ক্ষুধা নিয়ে স্কুলে যায়।
আবার বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ লোকের কর্মসংস্থান কৃষি থেকে আসে। কৃষিকাজে নারীর গুরুত্ব তুলে ধরে জাতিসংঘ আরও বলছে, কৃষিতে নারীরা যদি পুরুষের সমানভাবে অংশ নেন, তাহলে বিশ্বে ক্ষুধার্ত লোকের সংখ্যা ১৫ কোটি পর্যন্ত কমতে পারে।
২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধা দূর করে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করে কৃষিতে টেকসই উন্নয়নের জন্য আগামী ১৫ বছরে মোট আটটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো:
* সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশু থেকে শুরু করে খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে থাকা সব মানুষের খাবারের ক্ষুধা দূর করা।
* অপুষ্টির শিকার পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে, গর্ভবতী ও বুকের দুধ দানকারী নারী এবং বয়স্ক ব্যক্তিসহ সব মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ।
* কৃষি উৎপাদন ও কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা। নারী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, পশু পালনকারী, জেলেদের মতো জনগোষ্ঠীর জন্য ভূমি নিরাপত্তা, শিক্ষা, আর্থিক লেনদেনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার উৎস নিশ্চিত করা।
* টেকসই কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কৃষি উৎপাদনে পরিবেশের ভারসাম্য নিশ্চিত করে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রতিকূল আবহাওয়া, বন্যা, খরার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে ফসল টিকে থাকতে পারে, তা নিশ্চিত করা।
* ২০২০ সালের মধ্যে বীজ, শস্য, পালন করা পশুর জিনগত বৈচিত্র্য বাড়ানোয় কাজ করা।
* আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো, কৃষিভিত্তিক গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কৃষি উৎপাদন নিশ্চিত করা।
* বিশ্ব কৃষি বাজারে অনিয়ম ঠেকানো ও কৃষি পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে অহেতুক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা।
* বিশ্ব খাদ্য পণ্যের বাজারে দাম স্থিতিশীল ও ক্রেতার হাতের নাগালের মধ্যে রাখতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ।

No comments

Powered by Blogger.