ভূমধ্যসাগর এখন লাশের সাগর

ভূমধ্যসাগরের অধিপতি জিউসের ভাই পোসাইডনের রোষানলে পড়ে অনেক নাবিককে ডুবে মরতে হয়েছিল। গ্রিক বীর ওদিসিউসকেও অনেক উত্তাপ সইতে হয়েছিল। ট্রয়ের বীর এনিসকেও কম ঝক্কি মোকাবিলা করতে হয়নি। এসবই ঘটেছে অলিম্পাসের দেব-দেবীদের প্রতিহিংসার কারণে। এখন পুরাণের যুগ নেই, অলিম্পাসে বসে দেব-দেবীরাও আর কলকাঠি নাড়ছেন না। তবুও ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুর মিছিল থেমে নেই। ডুবে মরছে শত শত মানুষ। ভূমধ্যসাগর এখন ‘লাশের সাগর’-এ পরিণত হয়েছে। যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই সাগরে,
তা বিশ্বের আর কোনো সাগরে হয়তো হয়নি। কয়েকটি হিসাব দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে, আশা রাখি। গত মঙ্গলবারও ভূমধ্যসাগরের লিবীয় উপকূলে একটি নৌকা থেকে ৫০ অভিবাসীর লাশ উদ্ধার করেছে সুইডিশ একটি উদ্ধারকারী দল। নৌকার ইঞ্জিন থেকে উত্থিত ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়ে তারা মারা গেছে বলে জানিয়েছে ওই উদ্ধারকারী দলটি। লোকজনকে ডেকের ভেতরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়ার কারণে তারা আর বের হতে পারেননি। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে দম বন্ধ হয়ে তাদের মৃত্যু হয়।
১৬ এপ্রিল : লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে ৪১ জনের সলিল সমাধি ঘটে।
১৯ এপ্রিল : লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির জুয়ারাহ শহর থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে দক্ষিণ ইতালির লামপেদুসার কাছাকাছি নৌকা ডুবে ৮৫০ জন অভিবাসী মারা যান। এটা এ যাবৎকালের নৌকা ডুবে সবচেয়ে বড় মৃত্যুর ঘটনা।
২০ এপ্রিল : রোডস আইল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে একটি প্রবাল প্রাচীরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে অভিবাসীদের বহন করা একটি নৌকা ডুবে গেলে অনেকে নিখোঁজ হয়। পরের দিন কোস্টগার্ড জানায়, ৪৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
৫ মে : সিসিলি ও কালাব্রিয়া উপকূলে তিনজনের মৃত্যু ঘটে। নিখোঁজ থাকে আরও অসংখ্য অভিবাসী। কালাব্রিয়া থেকে তিনশ’ জনকে উদ্ধার করা হয়।
২৯ মে : ইতালির নৌবাহিনী ২১৭ অভিবাসীকে উদ্ধার করে। ১৭ জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
১৫ আগস্ট : লিবিয়া উপকূলে একটি পাচারকারীরা অবৈধ অভিবাসীদের একটি ডেকে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দিলে ইঞ্জিনের ধোঁয়ায় ৪৯ জনের মৃত্যু হয়।
আলজাজিরা ও উইকিপিডিয়া।

No comments

Powered by Blogger.