থাইল্যান্ডে ৬,৯৯৮ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা- বাংলাদেশকে আসিয়ানের সঙ্গে যুক্ত করতে রাজি থাইল্যান্ড

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক
(ডানে) ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রসচিব নরাছিত সিনহাসেনি
বিসিআইএম (বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার) অর্থনৈতিক করিডরের মাধ্যমে সড়কসহ নানা উপায়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের কানেকটিভিটিতে রাজি হয়েছে থাইল্যান্ড। আসিয়ানের নর্থ সাউথ ও ইস্ট ওয়েস্ট করিডরের মাধ্যমে লাওস, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, চীন ও মিয়ানমারের মাধ্যমে এই কানেকটিভিটির প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবেরা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বৈঠকের পর দুই পররাষ্ট্রসচিব পদ্মায় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।
পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, বৈঠকে থাইল্যান্ডের বাজারে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৯৯৮টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার কথা জানানো হয়। বাংলাদেশ আরও ১৫টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা চাইলে থাইল্যান্ড শুল্ক ও কোটামুক্ত পণ্যের সুবিধা পর্যালোচনার সময় তা বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছে।
প্রথমবারের মতো দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কানেকটিভিটি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। বিনিয়োগ ও স্বাস্থ্যসেবার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করতে দুই পক্ষ দুটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করতে রাজি হয়েছে। দুই ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠক দুটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া বাণিজ্য জোরদার করতে বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড (বিএবি) ও থাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ড ইনস্টিটিউটের (টিআইএসআই) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব নরাছিত সিনহাসেনি বলেন, নর্থ সাউথ ও ইস্ট ওয়েস্ট আসিয়ানের এ দুটি করিডরই দক্ষিণ চীনের কুনমিং শহরে গিয়ে শেষ হয়েছে। আর বিসিআইএমের শেষ প্রান্তও কুনমিং। কাজেই বিসিআইএম বাস্তবায়িত হলে তা আসিয়ানের করিডরের সঙ্গে যুক্ত হবে। বিসিআইএম বাস্তবায়িত হলে ভিয়েতনাম কিংবা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, বিসিআইএম আসিয়ানের সঙ্গে যুক্ত হলে ব্যবসা-বাণিজ্য উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। কানেকটিভিটি নিয়ে প্রথমবারের মতো থাইল্যান্ডের সঙ্গে এ ধরনের আলোচনা হলো। দুই পক্ষই কানেকটিভিটি বাস্তবায়নের জন্য একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করতে রাজি হয়েছে।
শহীদুল হক বলেন, থাইল্যান্ডের র্যানং বন্দরের সঙ্গে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের কানেকটিভিটির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ড প্রস্তাবটির ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থানের পথ সুগম করতে বৈঠকে একটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.