অদ্বৈত গল্পের ছেঁড়াখোঁড়া মানুষ by হরিশংকর জলদাস

কোনো কোনো সাহিত্যকর্ম সাহিত্যিকের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে। কোনো কোনো উপন্যাস কাব্য, নাটক, গল্প স্বীয় স্রষ্টাকে আড়াল করে। দৃষ্টিপাত, লালসালু, সূর্য দীঘল বাড়ি, পদ্মানদীর মাঝি, নিশিকুটুম্ব, প্রজাপতি, মেঘনাদবধ, অগ্নিবীণা, বনলতা সেন, তিতাস একটি নদীর নাম নির্মাতার প্রতিদ্বন্দ্বী। তিতাস একটি নদীর নাম-এর স্রষ্টা অদ্বৈত মল্লবর্মণ। অদ্বৈত কালজয়ী কিন্তু ক্ষীণজীবী। মাত্র সাঁইত্রিশ বছরের [১ জানুয়ারি ১৯১৪—১৬ এপ্রিল ১৯৫১] জীবন তাঁর। ক্ষীণ আয়ু বলে অধিক লিখতে পারেননি। প্রাগুক্ত উপন্যাস ছাড়া লিখেছেন জীবনতৃষ্ণা, রাঙামাটি, শাদা হাওয়া নামের উপন্যাস। এ ছাড়া রিপোর্টাজ ধাঁচের লেখা ভারতের চিঠি পার্ল বার্ককে, ৮ থেকে ১০টি কবিতা ও ২৪টির মতো প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা করেছেন। আর লিখেছেন চারটি মাত্র ছোটগল্প। সেই গল্পগুলো মানবজীবনের প্রণয়-পরিহাস, বেদনা-বক্রোক্তিকে ধারণ করে আছে।
অদ্বৈত মল্লবর্মণের ছোটগল্পগুলো হলো ‘সন্তানিকা’, ‘কান্না’, ‘বন্দীবিহঙ্গ’ ও ‘স্পর্শদোষ’। চারটি গল্পের স্থানিক পটভূমি ভিন্ন। ‘সন্তানিকা’র পটভূমি কোনো এক মফস্বল। ‘কান্না’ গল্পটি তৈরি হয়েছে তিতাসতীরের গোকর্ণঘাট-নবীনগর অঞ্চলকে ঘিরে। ‘বন্দীবিহঙ্গ’র নির্মিতি কলকাতা ও দূরবর্তী কোনো এক গ্রামের পটভূমিকায়। আর কলকাতার ফুটপাত ‘স্পর্শদোষে’র আরম্ভ ও পরিণতি স্থান। কোনো কোনো ছোটগল্পে কাহিনিকে ছাড়িয়ে চরিত্র মুখ্য হয়ে ওঠে। অদ্বৈতের ছোটগল্পে কাহিনির চেয়ে চরিত্রের প্রাধান্য বেশি। বিচিত্র সর্পিল ঘটনাসংস্থান ও বৈপরীত্যের সমন্বয় ঘটিয়ে অদ্বৈত তাঁর ছোটগল্পে চরিত্রের সার নিষ্কাশিত করেছেন। উল্লিখিত চারটি গল্পে চরিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে তিনি মানবীয় প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। মেদহীন ভাষাভঙ্গি ও নির্লিপ্ততা—এ দুটোকে মূলধন করে নিম্নবিত্ত জীবনের মৌলিক অনুভূতিগুলোয় চকিত গভীর অন্তর্দৃষ্টির আলো ফেলেছেন। তাঁর ভাষা ইঙ্গিতপূর্ণ।
২. ‘সন্তানিকা’ কোনো এক মফস্বলের গল্প। এ গল্পে অবিশ্বাস ও ভালোবাসাহীনতার মতো শহুরেপনা নেই। আবার গ্রাম্য সরলতা ও গ্রাম্যতারও অনুপস্থিতি আছে গল্পটিতে। শহর ও গ্রামের সেতু হিসেবে গিন্নিমা গল্পের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁর স্বাতন্ত্র্য ঘোষণা করছেন। ‘সন্তানিকা’ গল্পের মুখ্য চরিত্র ধনঞ্জয় ঘোষাল; মুখ্য উপাদান বুভুক্ষা—খাদ্যবুভুক্ষা আর স্নেহবুভুক্ষা। ধনঞ্জয়ের দুই ধরনের ক্ষুধাকে অবলম্বন করে এ গল্পের পরিকাঠামো নির্মিত হয়েছে। ধনঞ্জয় ঘোষাল বৃদ্ধ, নিঃসঙ্গ ও অসহায়। আত্মীয়-পরিজন সবাই তাকে ছেড়ে চলে গেছে, কিন্তু পিছু ছাড়েনি ক্ষুধা, এই ক্ষুধাতাড়িত একজন বৃদ্ধের জীবনকাহিনিকে ধারণ করে আছে ‘সন্তানিকা’। যাযাবর, আশ্রয়সন্ধানী ধনঞ্জয় উচ্চ প্রাইমারি স্কুলের সাবেক হেডমাস্টার রূপে পরিচয় দিয়ে বীরেশ্বরবাবুর বাড়িতে গৃহশিক্ষক হিসেবে নিযুক্তি পেয়ে অযোগ্যতার বহু প্রমাণ রাখে। নরেশ ও তার ভাইবোনদের পড়াতে বসে সে কেবল নিজের ব্যর্থজীবনের গল্প বলে, সেকালের গুরুমশায়ের অত্যাচারের গল্প বলে। ফলে পড়ুয়াদের আসল পড়াশোনা হয় না। পরীক্ষায় তাদের অকৃতকার্যতায় বীরেশ্বর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। গিন্নিমার অবহেলাও প্রবল হয়ে ওঠে। ধনঞ্জয়ের ‘গিন্নিমা’ সম্বোধনের জবাবে ‘গিন্নিমা চোখ তুলিয়াই মুখ অন্যদিকে ফিরাইয়া চলিয়া যান’।
ফলে ধনঞ্জয় ‘বহুদিনের সেই জীর্ণ পুঁটলিটা আবার কক্ষে তুলিয়া লয়’। অবাধ্য প্রবল ক্ষুধাকে সঙ্গী করে সজল চোখে সে ‘বাহির হয়ে পড়ে পথের মাঝে, নিরুদ্দেশের পানে’। বীরেশ্বরের বাড়ি থেকে অনতিদূরে খোলা মাঠের পুরোনো বটগাছটির নিচে আশ্রয় নেয় সে। এই বিপুল পৃথিবীর কোথাও তার মাথা গোঁজার কোনো ঠাঁই নেই। নিরুপায় হয়ে, শেষ পর্যন্ত ব্যথাক্লিষ্ট সর্বহারা মানুষটি পুনরায় গিন্নিমার সামনে এসে দাঁড়ায়। গিন্নিমার মুখে চিরন্তন মাতৃমূর্তির অজস্র স্নেহ উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। ধনঞ্জয় গিন্নিমার স্নেহছায়ায় আবার আশ্রয় পেয়ে যায়। ‘সন্তানিকা’ গল্পের প্রধান চরিত্র তিনটি—ধনঞ্জয়, বীরেশ্বর ও গিন্নিমা; আশ্রয়প্রার্থী, আশ্রয়দাতা ও মাতৃস্নেহে আবিষ্ট এক শাশ্বত নারী। টানাপোড়েন ধনঞ্জয় ও বীরেশ্বরের মধ্যে। তবে গল্পটি শুধু ধনঞ্জয়-বীরেশ্বরকে নিয়েই লেখা নয়, গল্পের একেবারে মূল ভূমিতে দাঁড়িয়ে আছে নারীর সন্তানবাৎসল্যের ব্যাপারটি। আর্থসামাজিক বৈষম্য এ গল্পের পশ্চাদ্ভূমি তৈরি করেছে। ধনঞ্জয় ব্রাহ্মণ, বীরেশ্বরবাবুও নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ, উভয়েই কুলীন বংশজাত। তবু উভয়ের মধ্যে পার্থক্য বিস্তর। এই গল্পে জটিলতা সৃষ্টিতে আর্থসামাজিক বৈষম্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। ধনঞ্জয় ক্ষুধায় তাড়িত, কিন্তু এই ক্ষুধা জৈবিক যতটা, তার চেয়ে বেশি মানবিক। অদ্বৈত এই বিষয়টিকেই তাঁর গল্পে প্রধানভাবে তুলে ধরেছেন।
৩. ‘কান্না’ গল্পের পটভূমি গ্রাম। গোকর্ণঘাটে এ গল্পের বিস্তার ও পরিণতি। গল্পটির কেন্দ্রীয় চরিত্র—গুরুদয়াল। দূরসম্পর্কীয় এক পিসি ছাড়া সংসারে তার আর কেউ নেই। বউ ছিল, মারা গেছে। বিবাগী মন তার, বৈরাগী আচরণ। কথায় কথায় গান ধরে, ‘রাধে রাধে গো রাধে, তোর লাগি মোর পরান কাঁদে’। এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায় গুরুদয়াল। একদিন সে নিরুদ্দেশ হয়ে গেল। দিন যায়, মাস যায়; পিসিমার প্রবল শোক অন্তরিত হয়; ‘পলাতকের সম্বন্ধে পাড়ার আলোচনাও ঠান্ডা’ হয়। এমন সময় গুরুদয়াল একদিন বাড়ি ফিরে, বেশভূষায় তার বিরাট পরিবর্তন, ‘মেয়েমানুষের চুলের মতো বড় বড় চুলগুলি তার কাঁধে ও পিঠে ছড়াইয়া পড়িয়াছে। দাড়িগোঁফ বেশ করিয়া কামানো।’ গুরুদয়ালই একদিন ঠিক করল সে আবার বিয়ে করবে। লম্বা চুল কেটে, ধোপদুরস্ত কাপড়চোপড় পরে, এক-আধটু গন্ধদ্রব্য মেখে সে নিজেকে বরের উপযুক্ত করে তুলল। বিয়ের দিন যত ঘনিয়ে আসতে লাগল, ততই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠল গুরুদয়াল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ে হলো না। ‘একদিন কন্যা-কর্তার নিকট হইতে পত্র আসিল, তিনি তাহার কন্যাকে অন্যত্র বিবাহ দিবেন স্থির করিয়াছেন।’ ভারী মন নিয়ে জামাকাপড় বেঁধে গুরুদয়াল গৃহত্যাগ করল। দুই মাস যেতে না যেতে গুরুদয়াল সঙ্গে বউ নিয়ে গ্রামে ফিরে এল। বিশ্রী বউ। গুরুদয়াল বউকে মোটেই ভালোবাসে না। কারণে-অকারণে বউকে ঠেঙায়।
অসহায়, বাপ-মা-মরা স্নেহের কাঙাল মেয়েটি স্বামীর সব অত্যাচার নীরবে সহ্য করে। গল্পটি এ পর্যন্ত সরলরৈখিকভাবে বর্ণিত হয়েছে। গল্পের শরীরে মুনশিয়ানার মোচড় লাগে তখনই, যখন গুরুদয়ালের সঙ্গে লঞ্চে ‘যাহার সহিত পূর্বে তাহার বিবাহের প্রস্তাব হইয়াছিল সেই তরুণী’ আহ্লাদীর হঠাৎ সাক্ষাৎ হয়। আহ্লাদীর সঙ্গে বিয়ে হচ্ছিল অন্য এক পুরুষের, আহ্লাদীর চোখে সে ‘বুড়ো’। বিয়ের আসর থেকে তাকে নিয়ে পালিয়ে আসার জন্য আহ্লাদী গুরুদয়ালকে প্রলুব্ধ করল। আহ্লাদীর বিয়ের দিন গুরুদয়াল প্রস্তুত। কিন্তু বিকেলে বিশ্রী বউটির ম্লানমুখ দেখে তার যেন কী হয়ে গেল। ‘একখানা কলমুখর অপূর্ব সৌন্দর্যমণ্ডিত মুখ’ আর ‘নির্বাক শ্রীহীন বেদনাময় মলিন মুখ’—দুটোই গুরুদয়ালের চোখের সামনে ভেসে উঠল। তার হূদয়ে বিশ্রী বউটির জন্য সহানুভূতির তরঙ্গ জেগে উঠল। সে বিরত হলো বিয়ের আসরে যাওয়া থেকে। এখানেই গল্পটির মধ্যে এক অপূর্ব মানবিকতার সঞ্চার হয়ে যায়। আধুনিক নগরজীবনের দাম্পত্য-ট্র্যাজেডিই অদ্বৈতের ‘কান্না’ গল্পে অবয়ব পেয়েছে। জায়া-পতিতে ঘর করে কিন্তু প্রত্যেকের অন্তরে বাদামের মতো অতৃপ্তির ফাটল। গুরুদয়াল বিশ্রী বউকে নিয়ে ঘর করেছে কিন্তু তার মন ব্যাপ্ত থেকেছে রূপ ও যৌবনের আরাধনায়। ধনঞ্জয়ের বুভুক্ষা মানবিক, গুরুদয়ালের বুভুক্ষা জৈবিক।
৪. বন্দীবিহঙ্গ’ মুসলিম সমাজের দুটি নরনারীর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির চালচিত্র। মূলত, ‘বন্দীবিহঙ্গ’ গল্পটি ঘটনাপ্রধান নয়, ভাব ও ভাবনাপ্রধান। গল্পটির প্রথমাংশে অদ্বৈতের ভাষা কাব্যময়তাকে ছুয়ে আছে। আবু মিয়া প্রাণ-উতপ্ত, কিন্তু দরিদ্র। অর্থ উপার্জনের জন্য তাকে কলকাতায় থাকতে হয়। দারিদ্র্যের খাঁচায় সে বন্দীবিহঙ্গ। স্ত্রী-সন্তানদের কলকাতায় নিয়ে আসার মতো অর্থনৈতিক ক্ষমতা তার নেই। রূঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হয়ে আবু মিয়ার সতেজ বাসনাগুলো ধীরে ধীরে মরতে থাকে। কিন্তু স্ত্রী জমিলার চিঠি তার অভিলাষগুলোকে মরতে দেয় না। জমিলার ক্ষোভ-দুঃখ-ভালোবাসামাখা চিঠি তার জীবনে প্রাণময়তার সঞ্চার করে। গল্পকার চিঠির মাঝখানে আবু মিয়ার মানসিক প্রতিক্রিয়ার কথাও সুকৌশলে আবু মিয়ার কথনে আমাদের জানিয়ে দিচ্ছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো মাতাল সময়ের পটভূমিকায় গল্পকার বাংলার দুজন নরনারীর বেদনালাঞ্ছিত জীবনের চালচিত্র নির্মাণ করেছেন ‘বন্দীবিহঙ্গে’। গল্পে মাটির গন্ধ আছে, মাটিবর্তী মানুষের জীবন-আলেখ্য আছে; বৃক্ষপল্লব, ঋতুর উল্লেখ আছে। ‘বন্দীবিহঙ্গে’ অদ্বৈত মল্লবর্মণ দারিদ্র্যের খাঁচায় বন্দী আবু মিয়া ও জমিলা নামের দুটো অসহায় নরনারীর জীবনকথা শুনিয়েছেন। আর্থসামাজিক জটিলতা তাদের ডানার ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে।
৫. আমাদের বিবেচনায় ‘স্পর্শদোষ’ অদ্বৈত মল্লবর্মণের শ্রেষ্ঠতম গল্প। একজন মানবসন্তান ও একটি মানবেতর প্রাণীকে উপজীব্য করে অদ্বৈত ‘স্পর্শদোষ’ গল্পে দুর্বিষহ জীবনের ইতিবৃত্ত নির্মাণ করেছেন। কুকুর মানবেতর প্রাণী। সে কখনো মানুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে না, অন্তত খাদ্যের জন্য। কিন্তু আকালের দিনে একটি অখ্যাত কুকুর খেঁকি হয়ে উঠল ভজার প্রতিপক্ষ। খাদ্য সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় এরা পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী। খাবারের একটা ঠোঙার দখল নিয়ে পরস্পরের যুদ্ধ শুরু। ভজা ধীরে ধীরে কুকুরের মতোই আচরণ করতে থাকে। তখন তার বিকৃত রূপ, ভীতিপ্রদ আচরণ। ধীরে ধীরে ভজার মধ্যে পৈশাচিকতা বাড়তে থাকে। ‘খেঁকির দিনরাত্রির শান্তি যেন ভজা চুষিয়া খাইয়াছে। পথ চলিতে ভজার ছায়ামাত্র দেখিলে খেঁকি ছুটিয়া পালায়। আবার, খেঁকির ছায়ামাত্র দেখিলে ভজা তাড়া করিয়া যায়—দৌড়াইয়া গিয়া ভয় দেখাইয়া আসে।’ এ এক দুর্ভাগা কুকুর। আহসান হাবীবের ‘ধন্যবাদ’ কবিতার ডলির মতো সে সৌভাগ্যবান নয়। ভজার মানবেতর নিষ্ঠুর আচরণে খেঁকির মৃত্যু হয় একসময়।
ভজার তাড়া খেয়ে ক্লান্ত খেঁকি একজন পথচারীকে কামড় দেয়। এই কামড়ের কারণেই খেঁকির মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত হয়ে যায়। ‘বীরবরদের লাঠির আঘাতে’ খেঁকির দেহান্ত ঘটে। ‘স্পর্শদোষ’ উপসংহারে এসে ‘কুকুর ও মানুষের সম্পর্কের গল্পে’র চেয়ে অন্য একধরনের মানবিক মূল্যবোধের গল্পের মাত্রা পেয়ে যায়। গল্পকার গল্পটিতে উন্মাদপ্রায় ভজার মধ্যে মানুষের সামূহিক মূল্যবোধের প্রতিচিত্র স্পষ্ট করে তোলেন। যে ভজা নিষ্ঠুরতার প্রতিমূর্তি, সে ভজা বীভৎসভাবে গণপ্রহারে মৃত খেঁকির জন্য উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। তার মুখে পাপবোধ ও অনুশোচনার চিহ্ন ফোটে। অদ্বৈত মল্লবর্মণের সুনিপুণ তুলির টানে ‘মানুষের নির্মম আচরণে’র এই গল্পটি শেষ পর্যন্ত চারুত্ব পেয়ে যায়। অদ্বৈত মল্লবর্মণ তাঁর গল্পে ভাঙাচোরা সাধারণ মানুষের জীবনকথা শুনিয়েছেন। তাঁর চারটি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র পুরুষ এবং অতি সাধারণ মানের পুরুষ। এই সাধারণ ছেঁড়াখোঁড়া মানুষগুলোর মধ্যে লেখকযুক্ত করেছেন অসাধারণ মাত্রা।

No comments

Powered by Blogger.