ইতি-নেতি-তিনি বিজয়িনী, যিনি অন্যকে পুরস্কৃত করেন by মাসুদা ভাট্টি

এ লেখা যখন লিখছি, তখন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে উদ্যাপিত হচ্ছে নারী দিবস। দেশে দেশে শারীরিক শক্তিবলে এগিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী সুদীর্ঘকাল ধরে নারীর ওপর যে বজ্রকঠিন শাসন ও শোষণ চালিয়ে আসছিল, এই দিন সেই নিগড় খোলার দিন। ১০০ বছর পার করেছে এই বিশেষ দিবস।


কিন্তু তার পরও আজ দেশে দেশে উচ্চারিত হচ্ছে নারীর অধিকারবঞ্চিত থাকার কথা, নির্যাতিত হওয়ার কথা, একই পদে কর্মরত থেকে বেতন-বৈষম্যের কথা। ঠিক এ রকমই একটি মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১ পাস করেছে এবং এতে উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারীকে সমান অংশীদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য নিরসনে জাতিসংঘের নির্দেশিকা বা সিডো সনদ সর্বতোভাবে বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে গৃহবধূর সারা দিন ধরে করা সাংসারিক কাজও যে 'শ্রমঘণ্টা' হিসেবে স্বীকৃত, তা বাংলাদেশে অনুমোদন পেয়েছে। এবার পেয়েছে কৃষিক্ষেত্রে নারীর কাজে শ্রমিক হিসেবে তার ন্যায্য স্বীকৃতি। এর আগে এই দুই ক্ষেত্রে নারী যত কিছুই করুক না কেন, ধরেই নেওয়া হতো যে এগুলো নারীর স্বাভাবিক কাজ, এর জন্য একটি নারীর পৃথিবীতে আসা, সুতরাং এগুলো যে কাজ বা শ্রমঘণ্টা হিসেবে এসবের স্বীকৃতি থাকা প্রয়োজন, তা নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়নি। আজ বাংলাদেশের নারী এই বিরল সম্মানের অংশীদার। গৃহপরিচারিকার কাজও যে শ্রমঘণ্টার আওতায় এসেছে, তাতেও তৃণমূল বা সমাজের প্রান্তিক নারীদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে নারীর এই জয়জয়কার কি কেবল এ কারণেই সম্ভব হয়েছে যে দেশের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে রয়েছেন একজন নারী?
তৃণমূল নারীদের দিকে চোখ ফেলি
দেশের তৃণমূল নারী আজ ঘরের বাইরে বেরিয়েছে, এই বের হওয়ার পথে কেউ ফুল বিছিয়ে দিয়েছে_এ কথা হলফ করে বলার উপায় নেই। তারা বেরিয়েছে প্রয়োজেনে। পরিবারের উপার্জনক্ষম পুরুষের একার পক্ষে সংসারের ভার সম্পূর্ণ টেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, নারীর নিজের হাতে অর্থনীতির ছড়িটিও প্রয়োজন, তাতে নিজের কথা প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগটুকু অন্তত থাকে। নইলে অন্তঃপুরবাসিনী হয়ে ঘরের দরজা-জানালা যতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করে, নারীর তাও ছিল না। বাঙালি নারীর এই দরজা ভেঙে বেরিয়ে আসার ইতিহাস নিয়ে নিশ্চয়ই কেউ একদিন বিস্তারিত গবেষণা করবেন; কিন্তু আজ এ কথা বলা যায় যে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে তৃণমূল নারীর এই ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করাটা বিশাল ভূমিকা পালন করেছে। সে জন্য যেকোনো ক্ষেত্রে নারীর এই অবদানের স্বীকৃতি প্রয়োজন ছিল, সরকারের মন্ত্রিসভা অনুমোদিত নারীনীতিতে তার চিহ্ন দেখতে পাই; কিন্তু প্রয়োজন এর স্থায়িত্ব।
আমরা আজ বিশ্বময় ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে মাতামাতি করছি। ৩০ বছর ধরে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম চলছে এই দেশে, যার মূলে আছে এই নারীরা। কিন্তু গবেষণা কী বলছে, ক্ষুদ্রঋণ নারীর জীবনের ব্যাপক কোনো পরিবর্তন ঘটাতে পেরেছে? আমরা স্মরণ করতে পারি, জোবরা গ্রামের সুফিয়ার কথা, যাঁকে দিয়ে শুরু হয়েছিল ক্ষুদ্রঋণ, তাঁর দুই মেয়ে আজ ভিক্ষা করে দিনাতিপাত করে। মজার ব্যাপার হলো, দেশব্যাপী আট মিলিয়ন নারীর কথা শুনছি, যারা আজ ক্ষুদ্রঋণের গ্রাহক, এর অর্থ হচ্ছে_এই আট মিলিয়ন নারী একটি সিস্টেমের কাছে ঋণগ্রস্ত। ঋণ যে কারো ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে না, তা যতই আমরা সাফল্যের সূচক দিয়ে প্রমাণ করতে চাই না কেন, তা সম্ভব নয়, সম্ভব নয় মোটেও। সেটি কেবল সম্ভব রাষ্ট্র এবং সরকার যদি তাদের ভাগ্যোন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়। আজকে এই যে আট মিলিয়ন ঋণগ্রস্ত নারীর কথা আমরা শুনি, তাদের সন্তানদের জন্য ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে কি? কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত নারীশিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। তাহলে নারীকে এগিয়ে আনতে কোন্টি বেশি প্রয়োজন? শিক্ষা না কি নগদ অর্থঋণ? এসব প্রশ্ন উত্থাপনের সময় এসেছে। ক্ষুদ্রঋণ বাঁচাতে কি পেরেছে তৃণমূল এই আট মিলিয়ন নারীকে অপুষ্টি থেকে? কোথাও কি দেখেছি আমরা এই নারীদের জন্য একটি ডিসপেন্সারি কিংবা চিকিৎসার কোনো সুব্যবস্থা? ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সুদ আদায়ের জন্য যতটা তৎপর, তার কিয়দংশও কি তৎপর হয়েছে মাতৃমৃত্যুর হার ঠেকাতে? নারী-শিশুকে স্কুলে বা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে সমান অধিকার পাইয়ে দিতে এই ঋণদাতারা কি রেখেছে কোনো ভূমিকা? কেন আমরা গ্রামে গ্রামে দেখি ব্র্যাক-স্কুল, কেন দেখি না গ্রামীণ স্কুল_বিষয়টি আসলে ভাবার মতোই। আমরা আজ দেশের পোশাকশিল্প খাত নিয়ে গর্ব করি। যদিও এখানে বঞ্চনা-লাঞ্ছনার শেষ নেই, তবু এই খাত নারীকে অর্থনৈতিকভাবে যতটুকুই নারীকে ক্ষমতাশালী করেছে, তার সামান্যও যদি সম্ভব হতো ক্ষুদ্রঋণের পক্ষে, তাহলে প্রশ্ন ছিল না। অথচ এই গার্মেন্ট-কর্মীদের নূ্যনতম বেতন কাঠামো, কর্মক্ষেত্রে তাদের অধিকার নিশ্চিত করার পক্ষে আমরা শুনি না বিশ্বময় আজ যাকে নিয়ে মাতম চলছে, সেই বরেণ্য ব্যক্তির মুখে কোনো কথা।
আমরা স্মরণ করতে পারি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সরকারের সেই অর্থমন্ত্রীর কথা। যিনি সেই সরকারের পক্ষ থেকে গ্রামীণ ব্যাংককে দিয়েছিলেন এককালীন ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ। ১৯৯৭ সালে দেশের একদল নারীর সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গিয়েছিলেন মাইক্রোক্রেডিট সম্মেলনে। অথচ জোট সরকারের আমলে দেশের একজন সফল অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে যখন গ্রেনেড হামলা করে হত্যা করা হয়, আমরা শুনিনি একজন বিখ্যাত মানুষের মুখে কোনো সমবেদনা কিংবা প্রতিবাদের কথা। আমরা আহসানউল্লাহ মাস্টারের মতো একজন শ্রমিকনেতাকে হত্যা করার প্রতিবাদে পাইনি এই বিশিষ্টজনকে। এমনকি দেশের প্রধান বিরোধী দলের নেতার জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে এক ভয়ংকর অরাজকতায় পড়ে দেশ, আমরা তখনো শুনিনি কোনো আওয়াজ এই ব্যক্তির কাছ থেকে, যিনি কেবল একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিকভাবে যে প্রতিষ্ঠানটি স্বীকৃতি পেয়েছে। এমনকি সারা দেশে বোমা হামলা, মৌলবাদের উল্লম্ফণ, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় নারীর প্রতি বৈষম্য, ধর্মের নামে নারীকে নির্যাতন_এসবের কোনো কিছুতেই আমরা তাঁকে দেখি না। আমরা তাঁকে পাই না বারবার নির্বাচনের নামে জনগণের অধিকার হরণকালে কোনো প্রতিবাদে, প্রতিরোধে, আমরা তাঁকে দেখি না বন্যা, খরা কিংবা কোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে। আমরা কখনোই তাঁকে দেখি না, দেশের সম্পদ রক্ষার কোনো মিছিলে। আমরা তাঁকে দেখি তখনই, যখন দেশে সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে অরাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় বসে, তখন। তিনি আবির্ভূত হন ত্রাতা হিসেবে, তিনি রাজনৈতিক দল গঠন করেন এবং দেশের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের প্রধানকে তিনি 'নাকে খত' দেওয়ার পরামর্শ দেন।
আমরা শুনতে পাই, বিশ্বময় তাঁর থিওরির কথা, বাংলাদেশে একটি অরাজনৈতিক সরকারের অন্তত দুটি মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দরকার। যাতে কিছু অমীমাংসিত বিষয়ের নিরসন সম্ভব হয়। সেই অমীমাংসিত বিষয়গুলো কী? এই তো গভীর সমুদ্রবন্দর, দেশের তেল-গ্যাস-কয়লা ক্ষেত্র ইজারা নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া। আজ পশ্চিমে দেখতে পাচ্ছি, তাঁর পক্ষে বরেণ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে গণমাধ্যমও বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে অর্গল খুলে নেমেছে। কোন জাদুবলে গণমাধ্যম দেদার বলে যাচ্ছে যে তাঁর বিরুদ্ধে দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ক্ষোভ কেবল তিনি নোবেল পেয়েছেন বলে? এই যে বক্তব্য, এর সূত্র কী সে বিষয়ে গণমাধ্যম কোনো ব্যাখ্যা দিচ্ছে না। একজন ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করে তাঁকে দিয়ে কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল এই অবাধ তথ্যপ্রবাহের যুগে অচল, সে কথা কেউ বুঝতে চাইছে বলে প্রত্যয় হয় না। অথচ আজ পশ্চিমের কাগজে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করতে গিয়ে গোটা বাংলাদেশের নেতিবাচক ইমেজ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। সবাই ভুলে যাচ্ছে যে একটি নির্বাচিত সরকার এখন দেশ চালাচ্ছে, একটি সংসদ রয়েছে, নিয়মিত অধিবেশন বসছে, হয়তো তাতে বিরোধী দল যোগ দিচ্ছে না; কিন্তু সেসব নিয়ে সমালোচনার কোনো চিহ্ন কোথাও দেখা যায় না। কোনো বিশেষ কারণ না থাকলে সপ্তাহের প্রতি সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক বসছে এবং দেশ ও জনগণের জন্য বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে এই বৈঠক থেকে; অথচ আজ বাংলাদেশকে তুলনা করা হচ্ছে ইরান কিংবা মিসরের সঙ্গে। বলা হচ্ছে, এসব দেশে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীরা অপমানিত হয়েছেন। কিন্তু এ কথাটি বলা হচ্ছে না যে এসব দেশে যাঁরা ক্ষমতায় আছেন বা ছিলেন, তাঁরা কেউই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত কোনো শাসক নন, তাঁরা দীর্ঘকাল ধরে ক্ষমতায় থাকা 'স্বৈরাচারী' শাসক মাত্র।
তিনি হবেন বিজয়িনী
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আজ দেশ-বিদেশে যাঁকে খাটো করার চেষ্টা চলছে, তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কেবল নন, তিনি একজন নারী। যিনি ১৯৭৫ সালে এক রাতে হারিয়েছেন পরিবারের প্রায় সব নিকটজনকে। কিছুদিন আগে হারিয়েছেন স্বামীকে। ছেলেমেয়েরা যাঁর দেশের বাইরে কর্মরত। একমাত্র জীবিত বোন ও তাঁর ছেলেমেয়েরাও তাঁর পাশে থাকেন না। তিনি দেখেছেন অর্থনৈতিক দৈন্য, মানুষের আঘাত তাঁকে জর্জরিত করেছে, প্রতিপক্ষের গ্রেনেড হামলা সহ্য করেছেন, এই দেশের জন্য তিনি বারবার নিজেকে উৎসর্গিত বলে দাবি করেন। তিনিই বুঝবেন দেশের দারিদ্র্য, ক্ষুধাক্লিষ্ট মানুষের কষ্ট। তিনি কেবলই তাই নারী প্রধানমন্ত্রী নন, তিনি হয়ে যান নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার নেত্রী_জননেত্রী, কারণ তিনি মানুষকে দেখেন মানুষ হিসেবে, সমাজ ও রাষ্ট্রে সমতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন তিনি নারীকে তাঁর অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে।
শেখ হাসিনা আজ আক্রান্ত চারদিক থেকে, কারণ তাঁর সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা একটি অনিয়মকে শুদ্ধ করার। নোবেল পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিটি যে রাষ্ট্রের আইনের শাসনের ঊধর্ে্ব নন, তা প্রমাণ না হলে এ দেশে আইনের শাসন উঠিয়ে দেওয়াই শ্রেয়। আজ ক্রমেই এই নারীকে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে দেশ-বিদেশের যৌথ আঘাতে। কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দল সর্বকালের রেকর্ড সৃষ্টিকারী ভোটে জয়লাভ করেছে। এককভাবে কোনো দেশেই এত ভোট পেয়ে কোনো দল ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আজ বিশ্ব নারী দিবসের এই দিনে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে নয়, শুধু একজন যোদ্ধা নারী হিসেবে শেখ হাসিনাকে জানাই অভিনন্দন, যিনি অর্জন করেছেন জনগণের নোবেল। প্রিয় শেখ হাসিনা, আপনি দেশের অগণিত নারীর পক্ষ থেকে অভিবাদন গ্রহণ করুন, আপনি দীর্ঘজীবী হোন। সত্যিকারের বিজয়িনী তিনি, যিনি অন্যকে পুরস্কৃত করেন। আজ বাংলাদেশের নারীর জন্য নারীনীতি অনুমোদন করে তিনি যে বিজয় অর্জন করলেন, তা অনাগতকাল স্মরণে থাকবে। ব্যক্তি কিংবা ব্যক্তির অর্জিত পুরস্কার বিস্মৃত হবে, কিন্তু এই নীতি জীবিত থাকবে আগামীদিনের নারীর পথপ্রকৌশলী হয়ে।

লেখক : সম্পাদক, একপক্ষ
editor@ekpokkho.com

No comments

Powered by Blogger.