ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দেবে না যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কলম্বিয়া

যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কলম্বিয়া গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদেশগুলোকে জানিয়ে দিয়েছে, ফিলিস্তিনের পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদের প্রশ্নে জাতিসংঘে কোনো ভোটাভুটি হলে তারা ভোটদান থেকে বিরত থাকবে। জাতিসংঘের এক কূটনীতিক এ কথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে, ফিলিস্তিনের সদস্যপদের প্রশ্নে কোনো প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে তারা ভেটো দেবে। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কলম্বিয়া এ ঘোষণা দেওয়ায় ফিলিস্তিনের সদস্যপদ নিশ্চিত করাটা আরও কঠিন হয়ে গেল।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে জাতিসংঘের এক কূটনীতিক বলেন, ‘আজ আমরা এখানে যে কথা জানতে পেরেছি, তাতে মনে হচ্ছে, নিরাপত্তা পরিষদে নয়টি ভোট নিশ্চিত করার কোনো পথ আর ফিলিস্তিনের জন্য থাকল না।’
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর সদস্যপদ পেয়েছে ফিলিস্তিন। এর প্রতিবাদে ইউনেসকোকে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
ভোটদানে বিরত থাকার কারণ গতকাল শুক্রবার ব্যাখ্যা করার কথা ছিল ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। এ ছাড়া ব্রিটেনের এক কর্মকর্তা জানান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ আগামী বুধবার পার্লামেন্টে এ বিষয়ে তাঁর দেশের অবস্থান তুলে ধরতে পারেন।
ফিলিস্তিনের সদস্যপদের প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটির কোনো চূড়ান্ত তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। তবে কূটনীতিকেরা বলছেন, ফিলিস্তিনের প্রস্তাব পাস হবে বলে মনে হচ্ছে না।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে কোনো প্রস্তাব পাস হতে হলে প্রস্তাবের পক্ষে কমপক্ষে নয়টি ভোট প্রয়োজন হয়। কিন্তু পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র আগেই বলে রেখেছে, তারা এ প্রস্তাবে ভেটো দেবে। আর কোনো স্থায়ী সদস্য ভেটো দেওয়া মানে ওই প্রস্তাব আর আলোর মুখ দেখবে না।
তবে পরিষদের ছয় সদস্য ব্রাজিল, চীন, ভারত, রাশিয়া, লেবানন ও দক্ষিণ আফ্রিকা প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে। অপর সদস্য জার্মানি এখনো তাদের অবস্থান জানায়নি।
তবে কূটনীতিকেরা বলছেন, জার্মানি হয়তো ভোটদানে বিরত থাকতে পারে অথবা বিপক্ষে ভোট দিতে পারে। পর্তুগালও এখনো তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। তবে এই দেশটিও ভোটদানে বিরত থাকতে পারে।
এ ছাড়া বসনিয়ার তিন আদিবাসী নেতা এখনো ফিলিস্তিনের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। সে ক্ষেত্রে এই দেশটিও ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে গ্যাবোন ও নাইজেরিয়া ফিলিস্তিনকে সমর্থন দিতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা।
ফিলিস্তিনের সদস্যপদের বিরোধিতা করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল জানিয়েছে, কেবল ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
গাজা অভিমুখে দুটি জাহাজ: অবরুদ্ধ গাজায় পৌঁছানোর জন্য ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সাংবাদিকদের নিয়ে দুটি জাহাজে করে রওনা হয়েছেন আয়ারল্যান্ড ও কানাডার ফিলিস্তিনপন্থী দুটি সংগঠনের কিছু কর্মী।
তবে ইসরায়েলি নৌবাহিনী জাহাজ দুটিকে আটকে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আয়োজকেরা জানান, আইরিশ সাওয়িরিজ ও কানাডিয়ান তাহরির নামের দুটি জাহাজ তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি বন্দর থেকে রওনা হয়েছে।
কানাডিয়ান বোট টু গাজা প্রচারণার মুখপাত্র ডেনিস কোসিম বলেন, ‘জাহাজ দুটি ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত জলভাগের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে এবং জাহাজে যারা আছে, তাদের বলে দেওয়া হয়েছে ইসরায়েলি নৌবাহিনী যদি তাদের আটক করার চেষ্টা করে, তাহলে তারা যেন বাধা না দেয়।’

No comments

Powered by Blogger.