গাদ্দাফি লিবিয়াতেই আছেন

লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি লিবিয়াতেই আছেন। সম্প্রতি তাঁর সঙ্গে কথাও হয়েছে। সিরিয়াভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল অ্যারাই ওরুবার মালিক গত মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা এএফপির কাছে এই দাবি করেন।
গত সোমবার লিবিয়া থেকে সাঁজোয়া যানের একটি বহর নাইজারে প্রবেশ করে। এ থেকে ধারণা করা হয়, গাদ্দাফি নাইজারে পালিয়ে গেছেন। এই গাড়িবহরের নাইজারে প্রবেশ সম্পর্কে ওয়াশিংটন জানায়, ওই বহরে গাদ্দাফির ঘনিষ্ঠ জ্যেষ্ঠ নেতারা থাকতে পারেন। তবে গাদ্দাফি ওই বহরে ছিলেন বলেন মনে হয় না। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ভিক্টরিয়া নুলান্ড বলেন, গাদ্দাফি লিবিয়ার বাইরে গেছেন—এই মুহূর্তে এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ আমাদের হাতে নেই।
নাইজারের সামরিক সূত্র এর আগে জানিয়েছিল, লিবিয়া থেকে সাঁজোয়া যানের একটি বহর নাইজারে প্রবেশ করে। ওই বহরে গাদ্দাফি থাকতে পারেন বলে জানানো হয়েছিল।
গত ২৫ আগস্ট লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে গাদ্দাফির প্রধান আশ্রয়স্থল বাব আল আজিজিয়ার পতনের পর থেকে তাঁর অডিও বার্তা প্রচার করে আসছে অ্যারাই ওরুবা টেলিভিশন। এই টেলিভিশন চ্যানেলের মালিক ও ইরাকের সাবেক এমপি মিসান আল জুবুরি বলেন, ‘আমি আপনাদের বলতে পারি, সম্প্রতি গাদ্দাফির সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। তিনি লিবিয়াতেই আছেন। মানসিকভাবে দারুণ শক্ত রয়েছেন গাদ্দাফি। তাঁর কথায় মনে হয়েছে, দখলদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে করতে মারা গেলে তিনি সুখী হবেন।’ তিনি আরও বলেন, গাদ্দাফির ছেলে সাইফ আল ইসলামও লিবিয়াতেই আছেন। তাঁর মানসিক দৃঢ়তাও গাদ্দাফির মতোই।
কীভাবে গাদ্দাফির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন?—বার্তা সংস্থা এএফপির এমন প্রশ্নের জবাবে মিসান আল জুবুরি বলেন, ‘আমরা কথা বলার প্রয়োজন হলে গাদ্দাফির কাছে বার্তা পাঠাই। আবার যখন তাঁর কোনো বার্তা প্রকাশের প্রয়োজন হয়, তখন তিনি নিজেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’
এদিকে বিদ্রোহীদের সংগঠন ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এনটিসি) পক্ষে প্রধান আলোচক আবদুল্লাহ কেনসিল বলেছেন, বানি ওয়ালিদ শহরের উপজাতি নেতাদের সঙ্গে সফল আলোচনা হয়েছে। বানি ওয়ালিদ শিগগিরই এনটিসির অধীনে আসবে।
আবদুল্লাহ কেনসিল বলেন, ‘আলোচনা সফল হয়েছে। আমরা এখন এনটিসির সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় আছি।’ তিনি জানান, বানি ওয়ালিদের উপজাতি নেতাদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার তাঁর বৈঠক হয়েছে। তাঁরা গাদ্দাফিবিরোধী বিপ্লবে যোগ দিয়েছেন। ওই নেতাদের অনেকেই এখনো ত্রিপোলিতে আছেন। যাঁরা বানি ওয়ালিদে ফিরেছেন, তাঁরা গাদ্দাফি-অনুগত সেনাদের প্রতিরোধের মুখে পড়েন বলে জানান তিনি।
আবদুল্লাহ কেনসিল বলেন, গাদ্দাফি অনুগত সেনারা বানি ওয়ালিদের উপজাতি নেতাদের ওপরও হামলা-নির্যাতন চালান। এতে সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
এই সফল আলোচনা আবার আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বানি ওয়ালিদের বিভিন্ন স্থানে গাদ্দাফি-অনুগত বাহিনী এখনো শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তাই এখানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

No comments

Powered by Blogger.