ফিলিস্তিনের সদস্যপদ নিয়ে কাল নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা

জাতিসংঘের সদস্যপদ পেতে ফিলিস্তিনের আবেদনের ব্যাপারে আলোচনা করতে আগামীকাল সোমবার আলোচনায় বসছে নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘে নিযুক্ত লেবাননের রাষ্ট্রদূত গত শুক্রবার এ কথা জানান।
সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত হলেও গত শুক্রবার রাতে জাতিসংঘে আবেদনের মুহূর্তটি ব্যাপকভাবে উদ্যাপন করে ফিলিস্তিনিরা। এদিকে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলকে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে দুই পক্ষের মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী ‘দ্য কোয়াট্রেট’ বলে পরিচিত জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
জাতিসংঘে নিযুক্ত লেবাননের রাষ্ট্রদূত নাওয়াফ সালাম নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সদস্যপদ চেয়ে ফিলিস্তিনের আবেদনপত্রটি নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্যরাষ্ট্রের কাছে পাঠিয়েছি। ওই আবেদনপত্র নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার বিকেল তিনটায় বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।’
সদস্যপদ পেতে গত শুক্রবার জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের কাছে আবেদনপত্র জমা দেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। পরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেন তিনি। ভাষণে তিনি বলেন, ‘এর আগে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের সব চেষ্টা ইসরায়েল সরকারের কট্টর অবস্থানের কাছে বারবার গুঁড়িয়ে গেছে।’ এ জন্যই পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে তাঁরা জাতিসংঘে এসেছেন।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। ফিলিস্তিনের আবেদন ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত হওয়ার পর এর পক্ষে কমপক্ষে পরিষদের নয় সদস্যের ভোট পেতে হবে এবং স্থায়ী পাঁচ সদস্যরাষ্ট্রের (যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন) কেউ ভেটো না দিলে তা পাস হবে। যদি নিরাপত্তা পরিষদের কোনো স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র ভেটো দেয়, সে ক্ষেত্রে নয় বা তার চেয়ে বেশি ভোট পেলেও প্রস্তাবটি পাস হবে না। নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবটি পাস হলে পরে তা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপন করা হবে। সেখানে জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যরাষ্ট্রের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে তা অনুমোদিত হতে হবে। তবেই জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ পাবে ফিলিস্তিন। সদস্যপদ পেলে জাতিসংঘের ১৯৪তম সদস্যরাষ্ট্র হবে ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনের সদস্যপদ পেতে অনিশ্চয়তার মূল কারণ, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ভেটো দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
সদস্যপদের জন্য আবেদনের মুহূর্তটিতে আনন্দ-উল্লাস করেছে ফিলিস্তিনিরা। পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোর কেন্দ্রস্থলে হাজার হাজার জনতা ফিলিস্তিনের পতাকা ও প্রেসিডেন্ট আব্বাসের ছবি নিয়ে জড়ো হয়।
ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলকে এক মাসের মধ্যে আবারও সরাসরি শান্তি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইইউ। একই সঙ্গে উভয় পক্ষকে ২০১২ সালের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছার অঙ্গীকার করার আহ্বান জানানো হয়। গত শুক্রবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট আব্বাসের ভাষণের পর এ আহ্বান জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.