সমতায় বোলারদের ম্যাচ

বৃষ্টিতে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরুই হয়েছিল ৪৫ মিনিট দেরিতে। এরপর লাঞ্চ পর্যন্ত আর বৃষ্টি না হলেও খেলা হয়েছিল মাত্র ১৭ ওভার। লাঞ্চের পর নবম ওভারের সময় আবারও বৃষ্টির হানা ব্রিজটাউনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর তখন ছিল ৫ উইকেটে ৯৮। ব্যাট করছিলেন চন্দরপল ও স্যামুয়েলস। জুটিতে ৪১ রান করে শুরুর মারাত্মক ধসটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন অভিজ্ঞ এই দুই ব্যাটসম্যান।
এর আগে দিনের শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়েছিল স্বাগতিকরা। আগের দিনের ৩ উইকেটে ৩০ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকরা দিনের শুরুতেই হারায় আরও দুটি উইকেট। দুটি উইকেটই নিয়েছেন ইশান্ত শর্মা। দিনের ষষ্ঠ ওভারে চার বলের মধ্যে বিশু ও সারওয়ানকে ফিরিয়ে দেন ইশান্ত। সারওয়ানকে এই নিয়ে তিনবার আউট করলেন এই ফাস্ট বোলার। সেটাও মাত্র ২৪ বলে।
ভারতীয় পেসাররা ব্রিজটাউনের আর্দ্রতাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন। ইশান্ত বাড়তি বাউন্স দিয়ে ও প্রাভিন ক্যারিবীয়দের ভুগিয়েছেন বলকে দুই দিকেই সুইং করিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচটি উইকেটই নিয়েছেন পেসাররা। ইশান্ত তিনটি, প্রাভিন ও মিঠুন একটি করে।
টেস্টের প্রথম দিনে ভারতকে লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন ভিভিএস লক্ষ্মণ। প্রথম টেস্টে ১২ ও ০ রানে আউট হওয়া এই ডানহাতি পরশু খেললেন লড়াকু এক ইনিংস। শেষ পর্যন্ত দেবেন্দ্র বিশুরই শিকার হয়েছেন (কিংস্টনের প্রথম দিনেও তা-ই)। তবে এর আগে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেছেন। গাভাস্কার, টেন্ডুলকার, দ্রাবিড়ের পর চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে পূর্ণ করেছেন ৮ হাজার টেস্ট রান। লক্ষ্মণের ইনিংসটার মাহাত্ম্য বেড়ে যাচ্ছে এ কারণে, ৪৪ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে প্রথম মধ্যাহ্নভোজটা সেরেছে ভারত। লাঞ্চের আগে আগেই রায়নাকে নিয়ে ইনিংস মেরামত শুরু করেছিলেন। দিনের দ্বিতীয় সেশনে আর উইকেটই পড়তে দেননি। ভারত চা-বিরতিতে যায় ওই ৪ উইকেটেই ১৪৭ রান তুলে। লক্ষ্মণ ব্যাট করছিলেন ৬৯ আর রায়না ৫২ রানে।
চা-বিরতি ফিরে এসেই ধাক্কাটা খায় ভারত। আসাদ রউফের প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্তে আউট হন রায়না। থাই প্যাডে লেগে বল ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে গিয়েছিল। ঝাঁপিয়ে পড়ে বারাথ ক্যাচ নিলেও সে রকম জোরালো আবেদন ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেনি। কিন্তু একটু ভেবেই তর্জনী তুলেছেন রউফ। বেচারা রায়না প্রথম টেস্টেও এমন ব্যাটে ছোঁয়া না লাগিয়েও ক্যাচ আউট হয়েছিলেন!
রায়না আউট হওয়ার দুই ওভার পরেই বিদায় নেন ধোনি। এ নিয়েও হয়েছে নাটক। এডওয়ার্ডসের করা ওই বলে প্রথমে নো বলের সংকেত দেন ইয়ান গোল্ড। কিন্তু এর পর নিশ্চিত হতে তৃতীয় আম্পায়ারের দ্বারস্থ হন। রিপ্লে দেখায় নো বল হয়নি। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ব্যর্থ ধোনি ফিরে যান মাত্র ২ রান করে। এডওয়ার্ডস এরপর হরভজন আর মিঠুনকে দ্রুত ফেরান। বিশু ফিরিয়ে দেন লক্ষ্মণ আর প্রাভিনকে। নতুন কোচ ফ্লেচারের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে ২০১ রানে অলআউট হয় ভারত।
কিন্তু দ্রুতই কোচকে নির্ভার করেন তিন পেসার। পর পর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন ইশান্ত ও প্রাভিন। দিনের শেষ ওভারে ব্রাভোকে আউট করে টেস্টে নিজের প্রথম উইকেটটি পেয়ে যান অভিষিক্ত মিঠুন। প্রথম দিনেই ১৩ উইকেটের পতন দেখেছে বারবাডোজ।

No comments

Powered by Blogger.