ফের অস্ত্রবিরতির আহ্বান লিবিয়ার

লিবিয়ায় চারটি অ্যাপাচি হেলিকপ্টার পাঠানোর অনুমতি দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। লিবিয়ায় অ্যাপাচি হেলিকপ্টার পাঠানো হলে যুদ্ধকে আরও উসকে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আবারও অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে লিবিয়া। চলমান সংকট নিরসনে রাশিয়াকে মধ্যস্থতা করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স।
গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন লিবিয়ায় মুয়াম্মার গাদ্দাফিবিরোধী লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার জন্য চারটি অ্যাপাচি হেলিকপ্টার দেওয়ার অনুমতি দেন। হেলিকপ্টারগুলো কয়েক দিনের মধ্যেই ন্যাটো বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেবে। সেগুলো এখন ভূমধ্যসাগর এলাকায় মোতায়েন রয়েছে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল ক্রিস প্যারি বলেন, লিবিয়ায় অ্যাপাচি হেলিকপ্টার পাঠানো হলে চলমান যুদ্ধ আরও উসকে যেতে পারে। তবে গাদ্দাফি বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলার কাজে ব্যবহার না করে বেসামরিক নাগরিক রক্ষায় হেলিকপ্টারগুলো ব্যবহার করা হলে এ ধরনের আশঙ্কা থাকবে না।
লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাগদাদি আল-মুহাম্মাদি বলেন, চলমান লড়াই বন্ধে তাঁর দেশ জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়নকে অস্ত্রবিরতির সময় ও তারিখ ঠিক করার আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় এক সম্মেলনে গত বৃহস্পতিবার আফ্রিকান ইউনিয়নের নেতারা লিবিয়ায় নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) বিমান হামলা বন্ধ করে রাজনৈতিকভাবে চলমান সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
কিন্তু লিবিয়া সরকারের পক্ষ থেকে অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দিলেও তা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে আগে থেকেই তা প্রত্যাখ্যান করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। ন্যাটো বলে আসছে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গাদ্দাফি বাহিনীর হামলা বন্ধ করা না হলে তাদের হামলাও চলবে।
এএফপির একজন প্রতিবেদক বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতেও লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে পাঁচটি শক্তিশালী বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির কম্পাউন্ড থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। এসব বিস্ফোরণে রাজধানী কেঁপে উঠেছে। রাজধানীর আকাশে জঙ্গি বিমান উড়তে দেখা গেছে।
ন্যাটোর বিমান থেকে গাদ্দাফির বাব আল-আজিজিয়া ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়। লিবিয়া কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, গত সোম ও মঙ্গলবার রাতে ন্যাটোর হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও দেড়শতাধিক লোক আহত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ত্রিপোলিতে সাংবাদিকদের বলেন, এর আগেও অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু কোনো পক্ষ তা মেনে চলেনি। এবার সরকার চায়, উভয় পক্ষই অস্ত্রবিরতি মেনে চলবে। বিশেষ করে ন্যাটো হামলা বন্ধ করবে।
তবে গাদ্দাফি পদত্যাগ করবেন না বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাদ্দাফি সব লিবিয়াবাসীর অন্তরে রয়েছেন। তিনি গেলে লিবিয়ার নাগরিকেরাও যাবেন।

No comments

Powered by Blogger.