দ্রুত এসইসির চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ: অর্থমন্ত্রী

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগে অনেক তারিখ দিয়ে ঠিক রাখতে পারিনি। তাই এবার আর কোনো তারিখ দিচ্ছি না। তারিখ বলাটা খুব মুশকিল। তবে নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্য কয়েক দিনের মধ্যেই নিয়োগ দেওয়া হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের পর্যালোচনা কমিটির প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, যুগ্মসচিব গকুল চাঁদ দাস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নিয়োগ-প্রক্রিয়া দেরির কারণে দুঃখ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেশে ছিলাম না। প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রী ১৫ মে আবার দেশের বাইরে যাবেন। তিনি যাওয়ার আগে সবকিছু চূড়ান্ত করে যাবেন বলে আশা করছি।’
নিয়োগ দেওয়ার আগে এসইসির নতুন চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
মুহিত বলেন, যেভাবেই হোক দ্রুততম সময়ের মধ্যেই এসইসির চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ হবে। তবে চেয়ারম্যান এখনো খুঁজতে হচ্ছে।
স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথক্করণ) যথাসময়ই হবে বলে জানান তিনি।
বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজারে সম্প্রতি ভীতি তৈরি হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তার নিজের মতো করে কাজ করছে। তবে সংস্থাটির গোয়েন্দা কার্যক্রমের তথ্য যদি বাইরে প্রকাশ হয়ে যায়, তাহলে তো সেই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া দরকার।
উল্লেখ্য, গত বুধবার এনবিআর এসইসির চেয়ারম্যানসহ পুঁজিবাজারে সংশ্লিষ্ট ১৫ জনের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
বরং দেশের শেয়ারবাজার গতকাল বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে হঠাৎ করেই ঊর্ধ্বমুখী হয়ে ওঠে। দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই এ দিন মূল্যসূচক ও লেনদেন বেড়ে যায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সাধারণ মূল্যসূচক ১২৯ দশমিক ৬৪ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে পাঁচ হাজার ৬১২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ৩৬১ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ৬৭৪ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে।
দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই দিনের শুরু থেকেই সূচকের ওঠানামা ছিল চোখে পড়ার মতো। নিম্নমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে গতকাল দিনের লেনদেন শুরু হয়। এর ১০ মিনিটের মাথায় ডিএসইতে সূচক ৪৯ পয়েন্ট পড়ে যায়। তবে লেনদেনের আধা ঘণ্টা পর সূচক আবার সাত পয়েন্ট কমে। বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটের পর থেকে সূচক ঘুরে দাঁড়িয়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দিকে যায়, যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল তালিকাভুক্ত ২৪৯টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২২৮টির, কমেছে ১৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল চারটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
স্টক এক্সচেঞ্জটিতে গতকাল ৪৪৯ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১৪২ কোটি টাকা বেশি।
অন্যদিকে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৭১টির, কমেছে ১৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের দাম। সিএসইতে গতকাল ৭২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৩২ কোটি টাকা বেশি।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে বেক্সিমকো, বেক্সটেক্স, বিএসআরএম স্টিল, তিতাস গ্যাস, আফতাব অটো, ইউনাইটেড এয়ার, আরএন স্পিনিং, আর এ কে সিরামিকস, পিপলস লিজিং ও ম্যাকসন স্পিনিং।

No comments

Powered by Blogger.