মধ্যপ্রাচ্যে গণবিক্ষোভে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে উইকিলিকস

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বলেছেন, তাঁর ওয়েবসাইট তিউনিসিয়ায় গণবিক্ষোভে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। উত্তাল গণবিক্ষোভের মুখে দেশটির প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদিন বেন আলী ক্ষমতা ত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ওই গণজাগরণের ঢেউ মিসরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে লাগে। মধ্যপ্রাচ্যে গণবিক্ষোভে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে উইকিলিকস। তাঁর ওয়েবসাইট স্ফুলিঙ্গের মতো কাজ করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার এসবিএস টেলিভিশনের ‘ডেটলাইন’ অনুষ্ঠানে অ্যাসাঞ্জ বলেন, মার্কিন কূটনীতিকদের গোপন নথি তাঁর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে বেন আলীর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের গোমর ফাঁস হয়ে পড়ে। এতে নানা প্রশ্ন সামনে চলে আসে। এর ফলে সে দেশের জনগণ সরকারবিরোধী বিক্ষোভ করতে সাহসী হয়ে ওঠে। তিনি বলেন, ‘লেবাননের আল আকবর পত্রিকায় প্রকাশিত আমাদের নথি তিউনিসিয়ায় গণবিক্ষোভে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখে। জনগণের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ উসকে দেয়।’
দারিদ্র্য ও বেকারত্বে জর্জরিত তিউনিসিয়ার জনগণ গত মাসে সে দেশে সরকার পতনে বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে বেন আলী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর মিসরে গণতন্ত্রপন্থীদের মাত্র ১৮ দিনের বিক্ষোভের মুখে সে দেশের স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের ৩০ বছরের শাসনের পতন ঘটে। এবার মিসর ছাড়িয়ে সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে ইয়েমেন ও জর্ডানে।
অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে লন্ডনে রয়েছেন। যৌন নিপীড়নের মামলায় তাঁকে সুইডেনের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি না, এ বিষয়ে লন্ডনের আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন অ্যাসাঞ্জ। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্বৈরশাসকদের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের যে জোয়ার বইছে, তা ‘খুবই খুশির’ ঘটনা।
গত সপ্তাহে শুনানির এক ফাঁকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অ্যাসাঞ্জ বলেন, তিনি তাঁর লম্বা চুল খাটো করিয়েছেন, এখন স্যুট পরছেন, যাতে তাঁর ওপর নয়, তাঁর কাজের ওপর সবার নজর পড়ে।
অ্যাসাঞ্জ বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় বিপুলসংখ্যক নাগরিক তাঁর কর্মকাণ্ডকে সমর্থন দিয়েছেন। এটা একটা ইতিবাচক দিক। তবে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডের ভূমিকায় তিনি নাখোশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রেখে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন অ্যাসাঞ্জ।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিকদের ওয়াশিংটনে পাঠানো গোপন নথি ফাঁস করে দিয়েছে উইকিলিকস। এতে ওয়াশিংটনের কোপানলে পড়েছেন অ্যাসাঞ্জ।

No comments

Powered by Blogger.