ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা বাড়াচ্ছে বিজেপি

ভারতের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের গুয়াহাটিতে। ধারণা করা হচ্ছে, এই বৈঠক থেকে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে জর্জড়িত ক্ষমতাসীন জোট সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চার (্ইউপিএ) বিরুদ্ধে প্রচারণা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেবে দলটি।দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে বড় ধরনের দুর্নীতির বিষয়টি সম্প্রতি ফাঁস হওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়ে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার। পদত্যাগে বাধ্য হন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী। বিরোধীরা দাবি তুলেছে, ঘটনা তদন্তে যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করতে হবে।বিষয়টি নিয়ে সরকার এবং বিরোধীরা একেবারে মুখোমুখী অবস্থানে। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রথম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বিজেপির নির্বাহী কমিটির সদস্যরা। ২০১০ সালে কয়েকটি দুর্নীতির ঘটনা ফাঁস হওয়ায় এই বৈঠক থেকে সরকারের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কৌশল নির্ধারণ করা হতে পারে। একই সঙ্গে সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বেশি বেশি সভা-সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। দুর্নীতির এই বিষয়গুলো তারা আগামী বাজেট অধিবেশন পর্যন্ত চাঙা রাখতে চায়। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ওই অধিবেশন শুরু হবে।এ ছাড়া সরকারের মধ্যে দুর্নীতি রুখতে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের মোবাইল লাইসেন্স দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির বিষয়ে তিনি কেন দীর্ঘ দিনেও ব্যবস্থা নেননি সে সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ—এই দুটি বিষয় ধরে মনমোহন সিংয়ের ওপর চাপ বাড়িয়ে চলেছে বিজেপি।
বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা যশোবন্ত সিংকে দলের জন্য নতুন নতুন মিত্র জোগাড় করা এবং যেসব দল ইতিমধ্যে এনডিএ জোটে আছে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির দায়িত্ব দেওয়ার পর এটাই দলের নির্বাহী কমিটির প্রথম বৈঠক।
বিজেপির প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইতিমধ্যে এক বছর পূর্ণ করেছেন নিতিন গাদকারি। নির্বাহী কমিটির বৈঠকে লোকসভায় দলের নেতা সুষমা স্বরাজ, রাজ্যসভায় দলের নেতা অরুণ জেটলি এবং জ্যেষ্ঠ নেতা এলকে আদভানির সঙ্গে পরামর্শ করে সরকারবিরোধী কৌশল আরও জোরদার করার সুযোগ পাবেন গাদকারি।আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, তামিল নাড়ু, কেরালা ও পণ্ডিচেরিতে নির্বাচন আসন্ন। কাজেই এ সময় নির্বাহী কমিটির এই বৈঠক বিজেপির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।আসামে নির্বাচনে জিতে তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টা করবে কংগ্রেস। কিন্তু এবার অবৈধ অভিবাসন প্রশ্নে বিজেপি বেশ ভালো অবস্থানে আছে। দলটি আশা করছে, এবার অভিবাসন প্রশ্নেও কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের লড়াই হবে। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়ারাপ্পার বিষয়টিও বৈঠকে আলোচিত হতে পারে। তারা দুর্নীতি এবং সরকারি জমি বরাদ্দে স্বজনপ্রীতির অভিযোগে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় আছে বিজেপি। তা ছাড়া দলের অভ্যন্তরীণ ও সাংগঠনিক অনেক বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে বৈঠকে।সোনিয়া আক্রমণের লক্ষ্য নয়: এদিকে নয়াদিল্লি থেকে আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিজেপির নির্বাহী কমিটির বৈঠকে সরকারের দুর্নীতির বিষয়ে দলটি আরও সোচ্চার হওয়ার কৌশল নির্ধারণ করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে তারা সরাসরি আক্রমণের লক্ষ্য স্থির করছে না। শনি ও রোববারের দুই দিনের বৈঠকে একটি রাজনৈতিক প্রস্তাবনা গ্রহণের লক্ষ্যে গত বুধবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘সারা দেশে আমাদের দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণার অংশ বোফোর্স কেলেঙ্কারি।’

No comments

Powered by Blogger.