নেপালে জাতীয় সরকার গঠন নিয়ে মতৈক্য হয়নি

নেপালে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো গতকাল শুক্রবারও মতৈক্যে পৌঁছাতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে দেশটিতে ২০০৬ সালে স্বাক্ষরিত শান্তিচুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঐকমত্যের সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
নেপালের গণপরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে নতুন সরকারের নেতৃত্ব দাবি করেছে সাবেক গেরিলা নেতা পুষ্পকমল দহল প্রচণ্ডর দল ইউনিফাইড কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (মাওবাদী)। তবে গণপরিষদের অন্য দুটি বড় দল নেপালি কংগ্রেস (এনসি) ও কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (সিপিএন-ইউএমএল) মাওবাদী নেতৃত্বাধীন সরকারে যোগ না দেওয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।
সিপিএন-ইউএমএলের জ্যেষ্ঠ নেতা রবীন্দ্র অধিকারী বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে কিছুটা সময় লাগতে পারে।’ এই দলটিই বিদায়ী সরকারের নেতৃত্ব দেয়। দলটি আগেই জানিয়ে দেয়, মাওবাদী নেতৃত্বাধীন সরকারে তারা যোগ দেবে না। এর আগে গণপরিষদের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল নেপালি কংগ্রেসও নিজেদের নেতৃত্বে ঐকমত্যের সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়।
দেশটির ৬০১ আসনের গণপরিষদে মাওবাদীদের ২২৯, নেপালি কংগ্রেসের ১১৫ ও সিপিএন-ইউএমএলের ১০৮টি আসন রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট রামবরণ যাদব ৭ জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপাল পদত্যাগ করেন।
এদিকে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এক বিবৃতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঐকমত্যের সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শান্তি-প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে এটা জরুরি। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র পি জে ক্রাউলি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মাধব কুমার নেপালের পদত্যাগের পর শান্তি-প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ায় এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী রবার্ট ব্লেক বলেন, গঠনমূলক সংলাপের মাধ্যমে সব পক্ষকে মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে।
১০ বছর সশস্ত্র সংগ্রামের পর ২০০৬ সালে ক্ষমতাসীন দলগুলোর সঙ্গে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে মাওবাদীরা। ২০০৮ সালের ১০ এপ্রিল নেপালে সংবিধান রচনার জন্য দুই বছরের মেয়াদের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দুই বছরেও সংবিধান প্রণয়ন করতে ব্যর্থ হয় গণপরিষদ। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে গত মে মাসের শেষ দিকে গণপরিষদের মেয়াদ এক বছর বাড়ানো হয়

No comments

Powered by Blogger.