ছাই উদিগরণ কমে এসেছে, বিমান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা

আইসল্যান্ডের এয়াকিউয়াতলুয়োকুটল আগ্নেয়গিরি থেকে গতকাল সোমবার আরেক দফা লাভা উদিগরণ শুরু হলেও ছাইয়ের উেক্ষপণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে এসেছে। সে দেশের ভূকম্পনবিশারদেরা বলেছেন, গতকাল দ্বিতীয় দফায় আগ্নেয়গিরি থেকে লাভার উদিগরণ শুরু হলেও লাভার সঙ্গে ছাইভস্মের পরিমাণ কম ছিল। ফলে দু-এক দিনের মধ্যে ইউরোপে স্বাভাবিক বিমান চলাচল শুরু হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।
ইতিমধ্যে সীমিত আকারে কয়েকটি এয়ারলাইনস তাদের ফ্লাইট চালু করেছে। তবে ইউরোপভিত্তিক প্রধান প্রধান বিমানবন্দর গতকালও বন্ধ ছিল। চলমান ফ্লাইট-সংকট পর্যালোচনার জন্য গতকাল ইউরোপের দেশগুলোর পরিবহনমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্স করেছেন। অন্যদিকে বিশ্ব বিমান পরিবহনবিষয়ক সংস্থা আইএটিএ চলমান সংকটের জন্য ইউরোপের দেশগুলোকে দায়ী করেছে। একই সঙ্গে তারা এ সংকটকে ‘ইউরোপসৃষ্ট বিশৃঙ্খলা’ বলে আখ্যায়িত করেছে। এখনো বিভিন্ন দেশে ফ্লাইট বিপর্যয়ের কারণে হাজার হাজার যাত্রী আটকে আছেন। বিশেষ করে মিসরে প্রায় ১৭ হাজার পর্যটক আটকা পড়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। আগামীকাল বুধবার ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিমান চলাচলে বিপর্যয়ের কারণে ওই বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। খবর এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসি অনলাইনের।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, গতকাল নতুন করে উদিগরণ হলেও লাভার রং ছিল ধূসর। এ ছাড়া তাতে কিছুটা সাদা রঙের মিশ্রণও দেখা গেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, ওই লাভায় ছাইয়ের পরিমাণ কমে এসেছে। লাভায় বাষ্পের আধিক্য থাকায় মাঝে মাঝে সাদাটে রং চোখে পড়ছে।
ইউনিভার্সিটি অব আইসল্যান্ডের ভূকম্পনবিশারদ ব্রিন্ডিস ব্রান্ডসেডাটির বলেছেন, জ্বালামুখের ঊর্ধ্বমুখী ভস্মপ্রবাহের উচ্চতা দুই কিলোমিটারে নেমে এসেছে। গত সপ্তাহে অগ্ন্যুৎপাত শুরুর সময় এর উচ্চতা ছিল ১১ কিলোমিটার।
ইউরোপের ৩৮টি দেশের বিমানপথের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোকন্ট্রোল বলেছে, ইউরোপে স্বাভাবিক অবস্থায় যেখানে প্রতিদিন ২৮ হাজার ফ্লাইট চালু থাকে, সেখানে গতকাল মাত্র আট হাজার চালু ছিল। লন্ডনের হিথ্রো, প্যারিসের চার্লস ডি গাউলে, আমস্টার্ডমের শিফল বিমানবন্দর গতকাল পুরোপুরি বন্ধ ছিল। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বিমানবন্দর কয়েক ঘণ্টার জন্য খোলা হলেও পরে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া রোম ও মাদ্রিদের বিমানবন্দরগুলোতে সীমিত আকারে বিমান ওঠানামা করেছে।
বিশ্ব বিমান পরিবহন-শিল্পের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান জিওভানি বিসিগনানি বিবিসিকে বলেছেন, ইউরোপের দেশগুলোর খামখেয়ালি সিদ্ধান্তের কারণে এ বিপর্যয় হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সরকারগুলো বিশেষজ্ঞদের মতামত না নিয়ে এবং তাঁদের সঙ্গে কোনো রকম সমন্বয় না করেই অনুমাননির্ভর আশঙ্কা থেকে সব ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ তারা যে পরিমাণ ঝুঁকির কথা বলছে, বাস্তবে বিমান উড্ডয়নে মোটেও ততটা ঝুঁকি নেই। তিনি বলেছেন, তাদের হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণেই বিমান কোম্পানিগুলোর কোটি কোটি ডলারের গচ্চা দিতে হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.