বার্সেলোনার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে রিয়াল

বার্সেলোনার দুর্দান্ত গতিতে রাশ টেনে দিল এসপানিওল। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বার্সার ঠিক ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে রিয়াল মাদ্রিদ। পরশু ভ্যালেন্সিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে বার্সেলোনার চেয়ে এক পয়েন্ট পেছনে দাঁড়িয়ে এখন ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির দল। ইতালিয়ান সিরি ‘আ’তে লািসওকে ২-১ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে এএস রোমা।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টটেনহাম হটস্পারের কাছে চেলসির হার ব্যবধান কমানোর একটা সুযোগ করে দিয়েছিল শিরোপা প্রতিদ্বন্দ্বীদের। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেও পারেনি আর্সেনাল। উইগান অ্যাথলেটিকের কাছে ২-৩ গোলে হেরে বরং শিরোপা লড়াই থেকে মোটামুটি ছিটকেই পড়েছে গানাররা।
সেই ছিটকে পড়াটা হয়েছে বড় মর্মান্তিক। ৪৮ মিনিটের মধ্যে ওয়ালকট ও সিলভেস্ত্রের গোলে ২-০-তে এগিয়ে গিয়েছিল ‘গানার’রা। কিন্তু তাদের শিরোপা লড়াইয়ে ফেরার স্বপ্নটাকে উড়িয়ে নিয়ে যায় শেষ ১০ মিনিটের ঝড়। ওয়াটসন (৮০), ব্রাম্বল (৮৯) ও এন’জগবিয়ার (৯০) তিনটি গোল ছিনিয়ে নেয় আর্সেনালের জয়। হকচকিত আর্সেন ওয়েঙ্গার আর কী বলবেন! শিরোপা-স্বপ্নের মৃত্যু একরকম মেনে নিয়ে নতুন লক্ষ্য ঠিক করেছেন—বাকি তিনটি ম্যাচ জেতা।
আর্সেনালের স্বপ্নের মৃত্যু, আর রিয়ালের স্বপ্নে লেগেছে নতুন রং। চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ হয়ে গেছে আগেই। বার্সেলোনার কাছে ‘এল ক্লাসিকো’ হেরে লিগ শিরোপার স্বপ্নটাও হয়ে গিয়েছিল ঝাপসা। কিন্তু পরশু সেটা আবার ফিরে এল গঞ্জালো হিগুয়েইন আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দুটি গোলে। ২৫ মিনিটে হিগুয়েইন স্প্যানিশ লিগে তাঁর ২৫তম গোলটি করে এগিয়ে দেন রিয়ালকে। ৭৮ মিনিটে লিগে রোনালদোর ২০তম গোল নিশ্চিত করেছে ৩৩ ম্যাচে রিয়ালের ২৭তম জয়।
এল ক্লাসিকোতে পরাজয়ের পর রিয়ালের সামনে সমীকরণটা খুব স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। নিজেদের সব ম্যাচ জিততে হবে, সঙ্গে প্রার্থনা করতে হবে বার্সার পা হড়কানোর। এসপানিওলের বিপক্ষে পা হড়কেছে বার্সার, রিয়ালও তাদের করণীয়টা ঠিকই করেছে। তৃপ্তিটা একটু বেশিই হওয়ার কথা, কারণ ভ্যালেন্সিয়া এখন পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে। ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়াল একের পর এক আক্রমণে বিপর্যস্ত করে ফেলে ভ্যালেন্সিয়ার রক্ষণদুর্গ। ভ্যালেন্সিয়াও অবশ্য ভালো কিছু প্রতি-আক্রমণে মাঝেমধ্যেই ভড়কে দিয়েছে রিয়ালকে। দ্বিতীয়ার্ধে একবার তো গোলের খুব কাছাকাছিও এসেছিল ভ্যালেন্সিয়া। ৬৩ মিনিটে ডেভিড সিলভার শট গোলপোস্টে লেগে না ফিরলে ম্যাচে সমতা এসে যেত।
৩৩টি করে ম্যাচ খেলার পর ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সা, রিয়ালের পয়েন্ট ৮৩। আর একটা দিকেও এগিয়ে আছে বার্সা। মুখোমুখি লড়াইয়ের দুটি ম্যাচেই জিতেছে কাতালানরা। দুদলের পয়েন্ট সমান হয়ে গেলে শিরোপা তুলে দেওয়া হবে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা দলকেই।
সিরি ‘আ’র শীর্ষ দুটি দলের মধ্যেও ব্যবধান মাত্র ১ পয়েন্টের। ৩৪ ম্যাচে ৭১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রোমা, ইন্টারের পয়েন্ট ৭০। সিরি ‘আ’র শিরোপা লড়াইয়ের নিয়মকানুনও স্প্যানিশ লিগের মতোই। পয়েন্ট সমান হলে বিবেচিত হবে মুখোমুখি লড়াইয়ের ফলই। আর এ ক্ষেত্রে স্বস্তিতে আছে রোমা। রোমা-ইন্টার দুটি ম্যাচের একটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে, অন্যটিতে ২-১ গোলে জিতেছে রোমা। পরশু লািসওর বিপক্ষে ইন্টারের জয়ও ২-১ গোলে। রচ্চির ১৪ মিনিটের গোলে অবশ্য পিছিয়ে পড়েছিল রোমা। ১০ মিনিটের (৫৩ ও ৬৩) মধ্যে মির্কো ভুচিনিচের দুই গোল জিতিয়েছে রোমাকে।
শিরোপা লড়াইটা রোমা-ইন্টারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার কথা। কারণ তৃতীয় স্থানে থাকা এসি মিলান এ দিন ২-১ গোলে হেরে গেছে সাম্পদোরিয়ার কাছে। রোমা যেখানে পিছিয়ে পড়ার পর জিতেছে, মিলান হেরেছে এগিয়ে যাওয়ার পর। ২০ মিনিটে বরিয়েল্লির গোল, ৫৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা আনেন কাসানো। ৯০ মিনিটে পাজ্জিনির গোল জিতিয়ে দেয় সাম্পদোরিয়াকে। হেরেও তৃতীয় স্থানেই আছে মিলান, তবে রোমার চেয়ে ৭ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়ল তারা।

No comments

Powered by Blogger.