চীনা সেনাদের ভয়ে ৪৭ বছর ঘরবন্দী!

চীনা সেনাদের ভয়ে প্রায় অর্ধশত বছর একটি ঘরে কাটিয়ে দিয়েছেন। ঘর থেকে একবারের জন্যও বাইরে পা রাখেননি। নাওয়া-খাওয়া সবই ওই ঘরের ভেতর। ভাবা যায়! আশ্চর্যজনক মনে হলেও ঘটনা সত্য। স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা এমন একজন মানুষের সন্ধান মিলেছে ভারতের আসাম রাজ্যে। তাঁর নাম থুলা বরা।
তখন ১৯৬২ সাল। চীন-ভারত যুদ্ধ চলছে। ভারতের অরুণাচল প্রদেশে ঢুকে পড়েছে চীনের লাল ফৌজ। এ খবর পৌঁছে যায় আসামেও। এ-কান ও-কান ঘুরে তা পৌঁছে আসামের শোণিতপুর জেলার দেউটি গ্রামের ১৬ বছরের কিশোর থুলা বরার কানে। তাঁর দেউটি গ্রাম আসামের তেজপুর শহরের কাছেই। দু-এক দিনের মধ্যে চীনের সেনারা আসামে হানা দেবে—এ খবরে এলাকার মানুষজন ব্রহ্মপুত্র নদীর পাড় হয়ে ছুটতে থাকে আসামের রাজধানী গুয়াহাটির দিকে।
থুলা বরা তখন সবে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেছেন। পালাতে পারেনি তাঁর পরিবারের সদস্যরা। বাড়ির মধ্যে একটি কুঠুরিতে লুকিয়ে পড়েন থুলা। ওই কুঠুরিতেই পার হয়ে যায় ৪৭ বছর। এখন তাঁর বয়স ৬৩ বছর।
থুলার ভাই বলেন, ‘একবারের জন্যও ওই কুঠুরি থেকে বাইরে আসেননি থুলা। মায়ের মৃত্যুর খবরেও না। আমার বিয়ের দিনও না। তাঁর জন্য ওখানেই খাবার রেখে আসা হতো। ওখানেই তাঁর নাওয়া-খাওয়া, ঘুম যাওয়া, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়া। তিনি কবিতা লিখতেন। এখন স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে। বেশ কয়েকবার চিকিত্সক দেখাতে চেয়েছি। তিনি একদম রাজি হননি।’
থুলা বরার স্বেচ্ছাবন্দিদশার খবর শুনে সত্যেন গোস্বামী নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে যান। চীনা লাল ফৌজ চলে গেছে সেই কবে—এ কথা তাঁকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে নিয়ে আসেন চার দেয়ালের বাইরে।

No comments

Powered by Blogger.