কৃষিঋণ দেওয়া হবে প্রকাশ্যে -রাজশাহীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, কৃষিঋণ দেওয়া হবে প্রকাশ্যে। কৃষকেরা এই ঋণ পেতে যাতে হয়রানির শিকার না হন এবং এই ঋণের টাকা তাঁরা কীভাবে কোথায় খাটাচ্ছেন, তা দেখার জন্য তিন স্তরের তদারকির ব্যবস্থা করা হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রাজশাহী কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আতিউর রহমান এসব কথা বলেন।
রাজশাহীকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা উল্লেখ করে আতিউর রহমান বলেন, রাজশাহীর মাটি কৃষির জন্য খুবই উর্বর। কৃষিভিত্তিক শিল্পের জন্য রাজশাহী শক্তিশালী স্তম্ভ হতে পারে। তবে গ্যাস ও বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকার কারণে এখানে বড় বিনিয়োগ সম্ভব হয় না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘কৃষক বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। কৃষিতে সাফল্যের কারণে আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে না। বিশ্বমন্দার মধ্যেও বাংলাদেশ টিকে আছে। দেশের ব্যাংকিং খাতগুলো স্থিতিশীল আছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নয় বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে।’
আতিউর রহমান আরও বলেন, এবার ঋণগ্রহীতা কৃষকদের মোবাইল নম্বর অবশ্যই জমা দিতে হবে। পরে সরাসরি কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দেখা হবে, তাঁরা এই ঋণের টাকা কীভাবে খাটাচ্ছেন।
কৃষিঋণ পেতে হয়রানি বন্ধের আশ্বাস দিয়ে আতিউর রহমান বলেন, এবার প্রকাশ্যে কৃষিঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে, যাতে কৃষকের ঋণের টাকা অন্যের পকেটে না যায়। একবার কোনো কৃষক ঋণ পেলে ওই কাগজ দিয়েই তিনি তিন বছর পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন—এমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ব্যাংকিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শিগগিরই ই-ব্যাংকিং চালু করতে যাচ্ছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক এস এম মনিরুজ্জামান, উপমহাব্যবস্থাপক এ এফ এম আসাদুজ্জামান এবং এস এম রবিউল হাসান।
পরে আতিউর রহমান রাজশাহী সিটি করপোরেশন আয়োজিত এক নাগরিক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। আজ শুক্রবার তাঁর নাটোরের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে গভর্নর গতকাল রাজশাহীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা কার্যালয় পরিদর্শন এবং অন্যান্য কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে কার্যালয় চত্বরে বৃক্ষ রোপণ করেন। এরপর তিনি রাজশাহী অফিসের বিভিন্ন শাখা পরিদর্শন করেন। তিনি ব্যাংকের সভাকক্ষে সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং সব সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বেলা ১১টায় তিনি রাজশাহী শিল্প ও বণিক সমিতি এবং ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর রাজশাহী অঞ্চলের বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রধান ও ব্যাংকের প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

No comments

Powered by Blogger.