গুয়ানতানামো বের বন্দীদের জন্য বিশেষ কারাগার

কিউবার গুয়ানতানামো বে কারাগারে আটক বন্দীদের একটি বিশেষ কারাগারে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে মার্কিন প্রশাসন। বিশেষ ওই কারাগারে আদালত কক্ষ ও দীর্ঘ মেয়াদে বন্দীদের রাখার জন্য প্রয়োজনীয় আবাসন সুবিধা রাখা হবে। গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়াশিংটন পোস্ট এ খবর জানায়। পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশেষ ওই কারাগারটি যৌথভাবে পরিচালনা করবে মার্কিন সরকারের বিচার, প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ। ওই কারাগারের আদালতে সাধারণ ফৌজদারি আইনের পাশাপাশি সামরিক আইনেও বিচারকাজ পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটক বন্দী এবং যারা নিয়মিত সাজা খাটছে তাদের জন্য কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত থাকবে। কোনো দেশ গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয় এমন মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি আবাসন ব্যবস্থাও থাকবে ওই স্থাপনায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, সাজা প্রদানের ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে এমন একটি টাস্কফোর্স এই বন্দিশিবিরের পরিকল্পনা তৈরি করেছে। তবে পরিকল্পনাটি এখনো অনুমোদনের পর্যায়ে পৌঁছেনি। বন্দিশিবিরটি স্থাপনের জন্য জায়গাও নির্ধারিত হয়নি। তবে ক্যানসাসের একটি সামরিক কারাগার ও মিশিগানে কয়েক দিনের মধ্যে বন্ধ হওয়ার অপেক্ষায় থাকা একটি কারাগারকে সম্ভাব্য স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
এদিকে এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতারা। রিপাবলিকান সিনেটর জন বোয়েনারের মুখপাত্র অ্যান্টোনিয়া ফেরিয়ার বলেন, ‘এটি একটি দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনা। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পা ফেলার সুযোগ পাবে সন্ত্রাসীরা।’ আইনজীবীদের সংগঠন আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়নের সদস্য জামিল জাফর বলেন, শুধু লোক দেখানোর স্বার্থে গুয়ানতানামো বের কারাগার বন্ধ করে দেশের ভেতরে নাম পাল্টে নতুন কারাগার বানানোর কোনো মানে নেই।
এ বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর গুয়ানতানামো বে কারাগার দ্রুত বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন বারাক ওবামা। কিন্তু ক্ষমতায় আসার প্রায় সাত মাস পেরোলেও গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করতে পারেননি তিনি। বর্তমানে দক্ষিণ কিউবায় মার্কিন নৌঘাঁটিতে অবস্থিত কারাগারটিতে ২২৯ জন বন্দী রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.