কাশ্মীরে ১০,০০০ সেনা পাঠানোর এক সপ্তাহ পরেই আরও ২৫,০০০ সেনা পাঠাচ্ছে ভারত by নাজির মাসুদি

কাশ্মীরে ১০,০০০ আধা সামরিক সেনা পাঠানোর পর এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে সেখানে আরও ২৫,০০০ সেনা পাঠাচ্ছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বড় ধরনের নিরাপত্তা অভিযানের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। সরকারী সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেনাদের আগমন শুরু হয়েছে এবং তাদেরকে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় মোতায়েন করা হচ্ছে।

সরকার গত সপ্তাহে বলেছিল যে, কাশ্মীরের সন্ত্রাস-দমন বাহিনীর শক্তি বাড়াতে ১০০ কোম্পানি সেনাকে সেখানে নেয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহে ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর অজিত দোভাল কাশ্মীর ঘুরে যাওয়ার পরপরই ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সূত্র জানিয়েছে, তিনি কাশ্মীরে সিনিয়র কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নিয়েছেন। উল্লেখ্য, কাশ্মীরে এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্টের শাসন চলছে।

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল দিলবাগ সিং গত সপ্তাহে বলেন যে, উত্তর কাশ্মীরে সেনার সংখ্যায় ঘাটতি রয়েছে এবং সে কারণে রাজ্যে অতিরিক্ত সেনা দরকার।

সেনা সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্তে কাশ্মীরে নানা ধরনের গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের গভর্নর সত্য পাল মালিক বলেন, সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ বাতিলের কোন পরিকল্পনা নেই। এই অনুচ্ছেদে কাশ্মীরের স্থায়ী অধিবাসীদের বিষয়ে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং বহিরাগতদের এখানে জমি ও সম্পদ ক্রয়ের ব্যাপারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

এদিকে, অমরনাথ যাত্রা ৪ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিতের কারণ হিসেবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কথা বলেছে সরকার, যদিও আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে তেমন বড় ধরনের কোন প্রতিকূল আবহাওয়ার কথা বলা হয়নি।

সরকারী সূত্র জানিয়েছে যে, যাত্রার জন্য মোতায়েনকৃত সেনাদের একটা অংশকে কিছু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে অন্যত্র নেয়া হয়েছে।

যাত্রার নিরাপত্তার জন্য প্রায় ৪০০ কোম্পানি বা ৪০,০০০ সেনাকে ওই অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়।

সূত্র জানিয়েছে, রাজ্যের সকল নিরাপত্তা সংস্থাকে সার্বিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বৃহস্পতিবার শ্রীনগর পৌঁছেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। প্রতিরক্ষা মুখপাত্র জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী প্রধান কাশ্মীরে দুই দিন অবস্থান করবেন।

এদিকে, জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে দেখা করেছেন এবং চলতি বছরের শেষ নাগাদ রাজ্যে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে কাশ্মীরের ভঙ্গুর পরিস্থিতির আরও অবনতি না করারও অনুরোধ করেছেন।

গত সপ্তাহে পিডিপি প্রধান এবং সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি কেন্দ্রীয় সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন সংবিধানের ৩৫এ অনুচ্ছেদ বাদ দেয়ার চিন্তা ভাবনা করা হলে বারুদের গুদামে আগুন লেগে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.