ফরাসি ফার্স্টলেডির অবমাননা, মানতে পারেননি ম্যাক্রন

৬৬ বছর বয়সী ব্রিজিত ম্যাক্রনকে ভালবেসে বিয়ে করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন (৪১)। বয়সের অনেক পার্থক্য হলেও ব্রিজিতকে এখনও ভীষণ ভালবাসেন তিনি। এ কথা সারাবিশ্ব জানে। কিন্তু তার সেই স্ত্রী, ফ্রান্সের ফার্স্টলেডিকে অবমাননা করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি ইমানুয়েল ম্যাক্রন। জবাবে তিনি বলে দিয়েছেন, বলসোনারো  আমার স্ত্রী সম্পর্কে খুব অসম্মানজনক কথা বলেছেন। ব্রাজিলের নারীদের উচিত তাদের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে লজ্জিত হওয়া। সোমবার শেষ হওয়া জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের পর্দার অন্তরালের খবর এটা।
প্রকাশিত হয়েছে বৃটেনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে।

এ সম্মেলনে অ্যামাজন জঙ্গলের অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সরব হয়েছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি ওই অগ্নিকাণ্ডকে আন্তর্জাতিক সঙ্কট বলে আখ্যায়িত করেছেন। তাতে নাখোশ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। ফলে দু’জনের মধ্যে এ নিয়ে ব্যক্তিগত এক বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। তার ওপর ফরাসি ফার্স্টলেডি ব্রিজিত ম্যাক্রনকে নিয়ে অনলাইনে একটি পোস্ট দিয়েছেন বলসোনারোর এক ভক্ত। সেই পোস্টে অবমাননা করা হয়েছে ব্রিজিতকে। তাকে ব্রাজিলের ফার্স্টলেডি মিশেল বলসোনারোর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এতে দেখানো হয়েছে, মিশেল বলসোনারোর তুলনায় ব্রিজিত ‘আনফেভার‌্যাবল’। সেই পোস্টকে অনুমোদন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। তিনি তাতে উৎসাহমুলক মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, ‘ তাকে অবমাননা করো না, হা হা’।

এর জবাবে ম্যাক্রন ওই পোস্টকে তার স্ত্রীর প্রতি ‘চরম অসম্মানজনক’ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেছেন, এটা দুঃখজনক। প্রথমত তার (বলসোনারো) জন্য ও ব্রাজিলের অধিবাসীদের জন্য এটা দুঃখজনক বিষয়।  ব্রাজিলের নারীরা সম্ভবত তাদের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে লজ্জিত হচ্ছেন। যেহেতু ব্রাজিলের মানুষদের জন্য আমার বিপুল ভালবাসা ও শ্রদ্ধা রয়েছে, আমি আশা করি তারা শিগগিরই এমন একজন প্রেসিডেন্ট পাবেন, যিনি তাদের হয়ে কাজ করবেন।

বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে লুফে নিয়েছে পশ্চিমা দুনিয়া। এবার জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে অ্যামাজন জঙ্গলে ভয়াবহ আগুনের বিষয়ে জরুরি বৈঠক আহ্বান করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ওই বৈঠক থেকে বলসোনারো’র ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করা হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্টের এমন উদ্যোগের জবাবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো তাকে পাল্টা জবাব দেন। তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনের ‘ঔপনিবেশিক মানসিকতা’ আছে বলে অভিহিত করেন। এরই মধ্যে সোমবার বলসোনারোর এক সমর্থক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্রাজিলের ৩৭ বছর বয়সী ফার্স্টলেডি মিশেলের সঙ্গে ফ্রান্সের ৬৬ বছর বয়সী ব্রিজিতের তুলনা করে পোস্ট দেন।

তাতে ব্রিজিতকে বিরূপ অর্থে প্রকাশ করা হয়। এর ট্যাগলাইনে বলা হয়, ‘এখন বুঝতে পারছেন কেন বলসোনারোকে উৎপীড়ন করছেন ম্যাক্রন?’ এর মধ্য দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন ব্রাজিলের ফার্স্টলেডির বয়স কম। তা দেখে ঈর্ষান্বিত হয়েছেন ম্যাক্রন। আর এ জন্যই তিনি বলসোনারোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন। এই পোস্টকে যেন অনুমোদন দিলেন বলসোনারো। ৬৪ বছর বয়সী বলসোনারো জবাবে ম্যাক্রনকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, ‘লোকটাকে অপদস্ত করো না, হা হা’। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওই পোস্টের এই জবাব কি প্রেসিডেন্ট বলসোনারো নিজে দিয়েছেন এমন এক প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের মুখপাত্র। কিন্তু ছেড়ে দেন নি ম্যাক্রন। তিনি বলেছেন, বলসোনারোর মন্তব্য ব্যতিক্রমধর্মী রুক্ষ্ম।

No comments

Powered by Blogger.