ভাগ্য খুলছে সুনামগঞ্জের কয়লা ব্যবসায়ীদের by এমএ রাজ্জাক

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তের (বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী) তিন শুল্কস্টেশনের ৬শ’ কয়লা ব্যবসায়ীর মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। গত ৩রা জুলাই ভারতের উচ্চ আদালত শর্ত সাপেক্ষে কয়লা উত্তোলনের পক্ষে আদেশ দেয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই আশার সঞ্চার হয়। এই তিন শুল্কস্টেশনের কয়লা ব্যবসায়ীরা জানান, এলসিকৃত ভারতে আটকে থাকা শত কোটি টাকা এবার পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে ব্যবসায়ীদের যেসব ইটভাটায় টাকা পাওনা রয়েছে তারাও পরিশোধ করে নতুন করে কয়লা নেবেন বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সচিব রাজেশ তালুকদার জানান, ভারতের রপ্তানিকারকদের পক্ষ থেকে তাদেরকে উচ্চ আদালতের রায়ের এই আদেশের কথা জানানো হয়েছে। তবে, অফিসিয়ালি এই সংক্রান্ত কোনো চিঠি এখনো তাদেরকে দেয়নি। তিনি বলেন, মেঘালয়ের রপ্তানিকারকরা তাদেরকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন, গত ৩রা জুলাই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট কয়লানীতি অনুসরণ করে কয়লা উত্তোলনের আদেশ দিয়েছেন। আদেশের উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে- পরিবেশ দূষণ না করে বৈজ্ঞানিক পন্থায় কয়লা উত্তোলন করা, উপজাতিদের জমিতে কয়লা খনি থাকলে তারাই এটির মালিক হবেন। ফলে ভারতের ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নিষিদ্ধ করা নিষেধাজ্ঞা সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করেছেন।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার জানান, এখন বৃষ্টির মৌসুম, বৃষ্টি মৌসুমে ভারতে কয়লা উত্তোলন হয় না। আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে আবার কয়লা উত্তোলন শুরু হবে। তখন মেঘালয়ের রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলীর আমদানিকারকরা কয়লা আমদানি করতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, তাহিরপুর উপজেলার তিন শুল্কস্টেশন দিয়ে প্রায় ৬শ’ আমদানিকারক কয়লা আমদানি করেন। শুল্কস্টেশনগুলো চালু থাকলে এখানে প্রায় ৫০ হাজার কয়লা শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। ২০১৪ সালের পর থেকে এখান দিয়ে কয়লা আমদানি প্রায় সময় বন্ধ থাকায় উপজেলা ও শহরে অর্থনৈতিক প্রভাব পড়ে।
ভারতের মেঘালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠনের আবেদনের ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১৭ই এপ্রিল ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল (এনজিটি) মেঘালয় সরকারের অবৈধ কয়লা খনন ও পরিবহন বন্ধের নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শুল্কবন্দর তাহিরপুরের বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।

No comments

Powered by Blogger.